পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাসিরুদিন ও পরবত্তী পাঠান-রাজগণ VRA প্ৰবৰ্ত্তনায় বিখ্যাত সাধু নুর কুতুব উল আলম বিহারের অধিপতি ইব্রাহিম সাহিকে গণেশের বিরুদ্ধে অভিযান করিতে আদেশ করিয়াছিলেন। গণেশ মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণে স্বীকৃত হইয়া এই শক্রর হস্ত হইতে নিস্কৃতি পান, কিন্তু নিজে মুসলমান না হইয়া যদুকে ঐ ধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইতে অনুমতি দেন। তৎসম্বন্ধে প্রচলিত নানারূপ উপাখ্যান দৃষ্টি মনে হয়, অসামান্য প্ৰতিভা ও বীৰ্য্যসম্পন্ন হইয়াও রাজা গণেশ খুব শাস্তিতে রাজত্ব করিতে পারেন নাই। চারিদিকে দুর্দান্ত পাঠান বাদসহ এবং আমীর ওমরাহ, হিন্দুদিগকে ইহারা বিধৰ্ম্মী ও কাফের বলিয়া ঘৃণা করিতেন। ইহাদের সকলের শীর্ষস্থানে গণেশ রাজা প্ৰতিষ্ঠিত হইয়া সৰ্ব্বক্ষণ শঙ্কিত ছিলেন। র্তাহার মাথার উপর চিরদিন শানিত খড়গ বুলিতেছিল। রাজনীতিকৌশল, পরাক্রম, শান্তিপ্রিয়তা প্ৰভৃতি নানা গুণে মণ্ডিত হইয়া তিনি তঁহার রাজত্বের আপৎ কালটা কোনরূপে কাটাইয়া দিয়াছিলেন। কথিত আছে রাজা যদু বা চেৎমল্প “জালালুদিন” উপাধি ধারণ করিয়া হিন্দুদের প্রতি অমানুষী অত্যাচার করিয়াছিলেন। তঁহার প্রায়শ্চিত্তের জন্য যে সুবৰ্ণধেনু ব্ৰত অনুষ্ঠিত হইয়াছিল, সেই কাৰ্য্যের অনুষ্ঠানকারী ব্ৰাহ্মণগণের প্রত্যেককে তিনি গোমাংস খাওয়াইয়া বলপূর্বক মুসলমান করিয়াছিলেন। জালালুদ্দিন সুবিখ্যাত সাধু সেখ সাহেদকে সোণারগ হইতে আনিয়া তঁহারই নির্দেশ মত সমস্ত রাজকাৰ্য্য করিতেন । তিনি রাজধানী পাণ্ডুয়া হইতে গৌড়ে প্ৰতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন এবং বহু শিল্পকলা-বিশিষ্ট মসজিদাদি নিৰ্ম্মাণ করিয়া প্ৰাচীন গৌড় নগর সুসমৃদ্ধ করিয়াছিলেন । তঁহার ভগ্ন মসজিদ, অতিথিশালা, দিঘী প্ৰভৃতি। “জালালী কীৰ্ত্তি” বলিয়া পরিচিত। অষ্টাদশ বর্ষাকাল নির্বিবাদে রাজত্ব করার পর তিনি ১৪৩১ খৃষ্টাব্দে মৃত্যুমুখে পতিত হন। সম্ভবতঃ স্বীয় রাজ্ঞীর প্রতি সন্দিগ্ধ স্থাইয়া ইনিই কবি চণ্ডীদাসকে হস্তীর পৃষ্ঠে বাধিয়া বেত্ৰাঘাত করিয়া হত্যা করিয়াছিলেন, কিন্তু ষ্টেপলটন সাহেব অনুমান করেন,-উক্ত কবির হত্যাকারী সম্ভবতঃ ইনি নহেন, পরবত্তী বঙ্গেশ্বর । জালালুদিনের জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ আহম্মদ সাহ ১৪৩১ খৃষ্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন, ইনি হিন্দু মুসলমান উভয় শ্রেণীরই প্ৰিয হইয়াছিলেন । ইহার রাজত্ব কালে জোনপুরের আহম্মদ সাহ–১৪৩১- "* ইব্রাহিম বঙ্গদেশে এক দল সৈন্য প্রেরণ করেন। ইহাদের S88 & 9 আক্রমণে আহম্মদ সাহ ব্যতিব্যস্ত হইয়া তাইমুৱালেনের পুত্র t সাহরুকের নিকট নিজ রাজ্যের দুরবস্থা জ্ঞাপন করিয়া একখানি চিঠি পাঠান। সাহারুক সুলতান ইব্রাহিমকে যে ভীতি প্ৰদৰ্শন করিয়া চিঠি লিখিয়াছিলেন, তাহা ষ্টুয়ার্ট তাহার ইতিহাসে আমূল উদ্ধৃত করিয়াছেন, ইহা সেই সময়ে সম্রাটদের প্রতিহিংসার ইচ্ছা যেরূপ ভাবে ব্যক্ত হইয়াছে, তাহা রোমাঞ্চকর। সেই চিঠির মৰ্ম্ম এই—“এই জগতের রাজ-চক্ৰবৰ্ত্তীর আদেশ পাওয়া মাত্র এক দিনের মধ্যে আপনি বঙ্গদেশের যত লোক বন্দী করিয়া আনিয়াছেন, তাহদের বাড়ী পৌছাইয়া যদু কর্তৃক অত্যাচার। fatefra-seye. &{}^2 & v,: সাহরুকের পত্র।