পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bፖS e বৃহৎ বঙ্গ পাট্রীদের মনেও বিশ্বাস জন্মাইয়াছিলেন যে তিনি তঁহাদের ধৰ্ম্মের অনুরাগী। এই সকল বিবিধগুণসত্ত্বেও তিনি হিন্দুস্থানের জাতীয় উন্নতির প্রধান অন্তরায় হইয়াউঠিয়াছিলেন । তিনি নিজের মাথা আকাশে ঠেকাইয়া অন্ত সকলের মাথা হেঁট করাইয়াছিলেন-রাজ্যবিস্তারের চেষ্টায় তিনি ক্ষুদ্র বিদ্রোহীকেও তুচ্ছ করেন নাই । রাজকীয় সমস্ত সৈন্য লইয়া তিনি তৃণদূৰ্ব্বাকেও নিষ্পেষিত করিয়াছেন। অগ্নিকণার হ্যায় অতি ক্ষুদ্র বিদ্রোহকেও তিনি মারাত্মক মনে করিতেন, তাহার প্রভাবে দেশের সমস্ত জ্যোতিৰ্ম্ময় শক্তি সুৰ্য্যের প্রভাবে নক্ষত্রের ন্যায় হীনপ্ৰভ হইয়া গিয়াছিল। আকবরের সময় হইতে হিন্দুস্থানের প্রকৃত দাসত্ব আরম্ভ হয় । এই দাসত্বের বেড়ী হাতে লইয়া মানসিংহ ও তােদর মল্ল দেশে দেশে ঘুরিয়াছিলেন। বাঙ্গলার প্ৰতাপ ঘুণাভরে সেই বেড়ী ফিরাইয়া দিয়া দূতকে বলিয়াছিলেন, “বোড়ী দিও আপনার মানিবের পায়।” প্ৰতাপ শুধু যশোরের স্বাধীনতা রক্ষা করিবেন-ইহা সঙ্কল্প করেন নাই,- দিল্লী পৰ্য্যন্ত অভিযান করিয়া রাজধানী বিধ্বস্ত করিবেন-ইহা জানাইয়া বলিয়াছেন (তরবারিখানি রাখিয়া) “যমুনার জলে ধোব এই তরবারি ” যে অনৈক্যের বীজ বাঙ্গলার জাতীয় চরিত্রের মধ্যে অন্তনিহিত ছিল-- সেই বীজ সম্রাটের কূট-নীতিতে অস্কুরিত হইয়া প্ৰতাপাদিত্য ও কেদার রায়ের সর্বনাশ সাধন করিয়াছিল । হিন্দু রাজাদের কেহ ছিলেন এই ব্যাস্ত্ৰবিক্রম সম্রাটের নখ, কেহ ছিলেন দন্ত । সাম্রাজ্যনীতির শ্ৰীবৃদ্ধির উপলক্ষ হইয়াছিলেন ইহারা,- কিন্তু ইহার উদ্ভাবনী শক্তি সমস্তই আকবরের । অশোকের সার্বভৌমত্ব বাহাদৃষ্টিতে আকবরেরই মত, কিন্তু দুইটা সম্পূর্ণরূপে স্বতন্ত্র । মৌৰ্য্যরাজার অনুশাসনে স্পষ্ট করিয়া লিখিত ছিল—“আমার পুত্র ও পৌত্ৰগণ যেন দেশ বিজয় বাঞ্ছনীয় মনে না করেন, তাহারা যেন ধৰ্ম্ম-বিজয়কেই যথার্থ বিজয় মনে করেন।” আমরা দেখাইয়াছি, আকবর কিরূপে পাঠানশক্তি নিমূল করিয়া স্বয়ং মোগল ওমরাদের প্রবল বিদ্রোহ দলন করিয়া-ভুঞারাজগণের দুর্দমনীয় শক্তি নিরস্ত করিয়া DDDSDDBB Dg DDDDB DDDKKSDBtBDB D KLLuY DDtDBB S MBB BDBB LB ভেদনীতি ও উৎকোচ দ্বারা বশীভুত করার কৌশল যথেষ্ট প্রয়োগ করিয়াছেন । যেখানে দরকার হইয়াছে, সেখানে যুদ্ধাদি-ব্যাপারে লিপ্ত হইয়াছেন, অগ্নির শেষ ও শত্রুর শেষ রাখিতে তিনি দেন নাই। জাহাঙ্গীর তঁাহার পিতার পথেই চলিয়াছিলেন, তবে আকবর তাহার সাম্রাজ্যবৃদ্ধির জন্য যথাসাধ্য নিষ্ঠুরতা পরিহার করিয়াছিলেন, জাহাঙ্গীরের রাজত্বে সে দয়াটুকু ছিল না। পরাজিত শক্রকে তিনি ক্ষমা করেন নাই । আকবর ইশা খাঁর সহিত সখ্য করিয়াছিলেন, কিন্তু জাহাঙ্গীর প্রতাপাদিত্য, মুকুন্দ বাস্ত্র, তৎপুত্র সত্ৰাজিৎ এবং কেদার রায়কে অব্যাহতি দেন নাই। এই সাৰ্ব্বভৌমত্বের চেষ্টা সাজাহান পৰ্য্যন্ত চলিয়াছিল ; আকবরের পর হইতে এই সাম্রাজ্যনীতির রথ অতি দুৰ্দ্ধাৰ্যভাবে চলিয়াছিল, আগ্ৰায় দেওয়ানি-খাসের দ্বারের উপরিভাগে লেখা আছে “স্বৰ্গ যদি থাকে, তাহা এইখানে—এইখানে ৷” দিল্লীশ্বর লোকমতে জগদীশ্বরের স্থান লইয়াছিলেন-“দিল্লীশ্বরে বা জগদীশ্বরে বা'-এই মোগল বাদ সাহিত্ৰিয় হিন্দু-মুসলমানে প্ৰভেদ জানিতেন না । শেষোক্ত দুই জনের ধমনীতে হিন্দুরক্ত প্ৰবাহিত ছিল । কিন্তু আকবর আকবর ও অশোক ।