পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br'80 বৃহৎ বঙ্গ আদেশ অমান্য করিতে পারিতেন না। তিনি তঁহাদের দেয় রাজস্ব অনেকগুণে বাড়াইয়া সম্রাটের অতীব প্রিয় হইয়াছিলেন, রাজকুমার সুলতান আজিম ওস্মানের আদেশ মান্য না। করিয়া দেওয়ানকে তাহারা ভয়ে ভয়ে মানিয়া চলিতেন। এই কারণে এবং ঈর্ষার বশীভুত হইয়া তিনি যাহা করিয়াছিলেন, মুরসিদকুলির উপস্থিতবুদ্ধি ও সাহসের জন্য সেই অভিসন্ধি ব্যর্থ হইল ; ববং মুরসিদকুলি সর্বসমক্ষে ষড়যন্ত্রকারী বলিয়া তাহার সহিত সন্মুখদ্বন্দ্বযুদ্ধের আহবান করিলেন। কুমার ভয় পাইয়া অনেক রূপে নিজদোষ গোপন করিতে চেষ্টা পাইলেন। আরঙ্গজেব এই ঘটনা জানিতে পারিয়া পৌত্রকে অত্যন্ত তীব্রভাবে ভৎসনা করিয়া এবং নানারূপ ভয় প্ৰদৰ্শন করিয়া পত্ৰ লিখিলেন, বাঙ্গলা ছাড়িয়া তাহাকে বিহারে থাকিতে আদেশ দিলেন। মুরসিদকুলি রাজস্ব-বিভাগের সমস্ত কৰ্ম্মচারীদিগকে লইয়া—সুলতানের বিনা অনুমতিতে ঢাকা হইতে মুরাসিদ বাদ চলিয়া আসিলেন । সম্রাটের আদেশ অনুসাবে রাজমহলে বহু ইংরেজ বন্দী হইলেন । ৫১ দিন তাহারা কারাবাস করিয়াছিলেন, মুরাসিদ কুলিব কড়া অনুশাসনে হুগলীতে ঐাহাবা ভীত হইয়। পড়িলেন। সুজা দত্ত মূল সনদ তাহার হারাইযা ফেলিয়াছিলেন, সুতরাং ইংরেজের দেওয়ান সাহেবের সেক্রেটারীকে অনেক উৎকোচ দিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। তঁহাদের এদেশের কারবার একেবারেই উঠিয়া যাইত, কিন্তু সুলতান আজিম ওস্মান তাহদের প্রতি সদয় ছিলেন, এবং মুবাসিন্দকুলিও তাহাব কড়া শাসন একটু শিথিল কৰিলেন। সুলতান রাজমহলে বন্দী ইংরেজিদিগকে মুক্তি দিয তাহাদিগকে কলিকাতায় অ্যাসিতে তনুমতি দিলেন । তাহাদের বাণিজ্য আবার বাড়িয়া চলিল । এই সমযে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির দুই দলের মধ্যে বা সাড়া মিটিয়া যাওয়াতে এবং মাদ্রাজের সঙ্গে সম্বন্ধ বিচু্যত হওয়াতে র্তাহাদের ব্যবসায়ের বিশেষ উন্নতি হইল। কোম্পানিব দুই দল একত্ৰ হইলেন এবং তাহদের সঞ্চিত বহু অর্থ ফোট উইলিয়াম দুর্গে মজুত রহিল। এই সময়ে ( ১৭০৬ খৃষ্টাব্দে ) আরঙ্গজেবের মৃত্যু হয়। তিনি মরিবার পূর্বে · হার রাজ্য তিন ভাগ করিয়া তিন পুত্রকে দিয়া গিয়াছিলেন, কিন্তু তাহারা তাহা মান্য না করিয়া ঝগড়া করিতে লাগিলেন । আজিম সাহ দিল্লীর সিংহাসনে বসিলেন ; বঙ্গের মসনদ ত্যাগ করিয়া আজিম ওস্মান সিংহাসনের দাবী করিয়া অগ্রসর হইলেন । আগ্রার শাসনকৰ্ত্তা অ’ জিম সাহের শ্বশুর আজিম ওস্মানের গতিরোধ করিলেন এবং আজিম সহ বঙ্গদেশ হইতে প্রেরিত এককোটি টাকা বাজস্ব দখল করিয়া শাসনকৰ্ত্তাকে পরাভূত করিয়া বন্দী করিলেন। র্তাহার নিজ তহবিলে এক কোটী টাকা ছিল। এই বিপুল অর্থে তিনি অসংখ্য সৈন্য সংগ্ৰহ করিয়া আগ্রার নিকটে জাজু নামক স্থানে আজিম সাহের সঙ্গে যুদ্ধ করিলেন। যুদ্ধে আজিম সাহ ও তাহার দুই পুত্ৰ বেদার বক্ত এবং বালঝা নিহত হইলেন ( ১৭০৭ খৃঃ ) । আজিম ওস্মানের পিতা মহম্মদ মজিয়াম “সাহ আলম” উপাধি গ্ৰহণ করিয়া দিল্লীর নি,ংহাসনে অভিষিক্ত হইলেন । আজিম ওস্মান বঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যার অধিপতি হইয়া ফিরিয়া আসিলেন । সহি আলমের মস্তিষ্ক খারাপ হওয়াতে সাম্রাজ্যের ভার অনেকটা আজিম ওস্মানের