পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা সীতারাম রায় b”8ዓ পূৰ্ব্ব হইতেই শিল্পের খ্যাতি ছিল। সীতারাম শিল্পের পরম উৎসাহদাতা ছিলেন। এখনও নালিয়া গ্রামে সাত হাত উচ্চ নানারূপ কাৰুকাৰ্য্যশোভিত চিনির মঠ, রথ, ময়ুরপঙ্খী প্ৰভৃতি DD DB LDBD DDYDDBBB BBD BB DBBDD ggBDD uBB DB DBDYSTTDDB অধিকাবে তাহার বেড় দুই হাত এবং উচ্চতায় দেড হাত হইত। এই জিনিষটা তুলার ন্যায় হাল্কা, কাজ এত সুন্ম ও সুন্দর যে মনে হয় এত বড় কদমাটা ফু দিলে উডিয়া যাইতে পারে। তঁহারই রাজধানীর নিকটবৰ্ত্তী স্থানে অতি সূক্ষ্ম বাস্ত্র তৈরী হইত, এখন তাহার লুপ্ত গৌরবের চিহ্ন আছে। সাতৈরের পাট ও মাদুর একসময়ে ভারতবিশ্রাত ছিল । কয়েক বৎসর মাত্র অতীত হইল। তখনও এমন কারিগর বর্তমান ছিল যে ৫০. ০২ টাকা মূল্যের মাদুর তৈরী করিতে পারিত। তঁহারই মন্দিরাদির ইটে যে কারুকাৰ্য্য দৃষ্ট হয়, তাহ বঙ্গে সূক্ষ্ম শিল্পের উৎকৃষ্ট নিদশন। কাঠের উপর, কাগজের উপর তাহার সময়ের যে কত সুন্দর সুন্দর কারুকাৰ্য্যের নমুনা আমরা পাইয়াছি তাহাতে মনে হয়, বীর সীতারাম রায় কেবল যুদ্ধবিদ্যায় দেবসেনাপতির পূজা করিতে অর্ঘ্য প্ৰস্তুত কবিয়া ক্ষান্ত রহেন নাই, তিনি স্বর্ণপদ্মের ডালি অর্ঘ্য দিয়া বঙ্গের কলা লক্ষ্মীর পূজা করিতেন। ভুষণা পরগনা পূর্ব হইতে বস্তু ও কাগজ প্ৰস্তুত করার জন্য প্ৰসিদ্ধ ছিল (“বানান্ত-মখমল-পটু ভূষণাই খাসা। বুটাদার ঢাকাই দেখিতে তামাসা৷” রামপ্রসাদ-বিদ্যাসুন্দর। ) ভূষণাই কাগজ সেকালে বঙ্গের সর্বত্র সুপরিচিত ছিল । আমরা ইতিপূর্বে এই অঞ্চলের যে শিল্পমণ্ডিত ঘরের উল্লেখ করিয়াছি, তাহাও সীতারামের রাজধানীর অনতিদূরবত্তী। মহম্মদপুরে এখনও কাচারু নামক একজাতীয় লোক বাস করে, তাহার কাচের চুড়ী প্ৰস্তুত করিত। গালা, মোম, তামা, পিত্তল, কঁাসা এবং সোণারূপার কারুশিল্পের জন্য সীতারামের ভূষণা। বিখ্যাত ছিল। মুরাসিন্দাবাদ নবাববাড়ীর যে সুবৃহৎ কামান আছে।--তাহ ঢাকার জনাৰ্দ্দন কামার ১৬৩৭ খৃঃ অব্দে নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, পিত্তলফলকে এই কথাই উৎকীর্ণ আছে। এই কামানের নাম “জাহান-কোষ” বা “জগজয়ী” । সীতারাম। এই জনাৰ্দন কৰ্ম্মকারের স্বজাতীয় শিল্পী দিগকে ঢাকা হইতে আনিয়া মহম্মদপুরে উপনিবিষ্ট করেন। তাহারাই তাহার সুবিখ্যাত “কালু খাঁ ও ঝুমঝুম খা” নামক কামান নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। ঢাকায় উক্ত নামধেয় কামানদ্বয়ের মত একটি বৃহৎ কামান আছে, তাহা সীতারাম রায়ের কি না বলিতে পারি না । সীতারামের বহু পুষ্করিণী ও দীঘি এখনও বিদ্যমান। ইষ্টকমন্দির নষ্ট হইয়া গিয়াছে, কিন্তু সেই সকল দীঘির পুণ্য নীরা এখনও সুপেয় । সর্বাপেক্ষা বড় দীঘি “রামসাগর”, এখনও পাহাড় লইয়া তাহার বেষ্টনী ৬,০০০ হাতের কম হইবে না, ইহার বর্গফল অনূ্যন ২০০ বিঘা। “সুখসাগর” নামক দীঘিতে গুরুতর রাজ্যশাসন ও যুদ্ধবিগ্রহের শ্রান্তি দূর করিবার জন্য নানা কাকুশিল্পমণ্ডিত “ময়ুরপঙ্খী” নৌকাতে বহু রমণী-পরিবৃত হইয়া ‘বিলাসী” সীতারাম নৌবিহার করিতেন। অতি জটিল ও কঠিন রাজনৈতিক সমস্যাপূর্ণ সঁহার জীবন, যিনি দরিদ্র অবস্থা হইতে সাৰ্ব্বভৌম সাম্রাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন, তাহাকে ‘বিলাসী” বলা মূর্থিতা, তবে পাশ্চাত্ত্য সভ্যতা ও রুচি অনুগত “একপত্নীক” ধৰ্ম্ম তখনও বঙ্গদেশে প্রচলিত