পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরবর্তী বাদসাহগণ bo902 সিরাজের তেজ, বিক্রম, বুদ্ধি সকলই ছিল,-এত অল্পবয়সে এরূপ বুদ্ধির তীক্ষতা ও লোকচরিত্র বুঝিবার শক্তি বোধ হয় আলিবর্দীরও ছিল না। র্তাহার দোষ ছিল—তিনি মাতামহের আদরে একেবারে যাহা ইচ্ছা তাহাই করিতেন, চারিদিকের লোকজনকে কীটের মত গণ্য করিা তন, কাহাকেও হস্তগত করিয়া কাৰ্য্য উদ্ধার করিবার শক্তি র্তাহার আদেী ছিল না। আলিবর্দী তাহার অমায়িক ব্যবহার দ্বারা শক্রকেও মিত্ৰ করিতে পারিতেন। এক রাত্রির কথা মনে পড়ে। আলিবর্দীর প্রধান সেনাপতি মুস্তাফা খাঁ ও অপরাপর পাঠান সামন্তগণ নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিতেছিলেন। তঁহারা শক্ৰদের সঙ্গে যোগ দিয়া আলিবন্দীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিতে প্ৰস্তুত,— গুপ্তচরের মুখে নবাব সমস্ত কথা শুনিয়া বিনা অস্ত্রে শরীর-রক্ষী ছাড়া একাকী সিরাজের হাত ধরিয়া দ্বিপ্রহর রাত্রে মুস্তাফা খাঁর শিবিরে প্রবেশ করিলেন । এই সময়ে এই অবস্থায় নবাবকে দেখিয়া পাঠান সেনাপতি বিস্মিত হইয়া গেলেন। আলিবর্দী খাঁ। বলিলেন, “আপনাকে আমি আমার প্রধান সহায় বলিয়া জানিতাম, আপনি আমার অনেক উপকার করিয়াছেন। এখন জানিতে পারিলাম। আপনি আপনার নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিতেছেন। অতি নিঃসহায়, নিরন্ত্র ও অসমর্থ অবস্থায় বৃদ্ধ নবাব আপনার দ্বারস্থ ; আপনি অনায়াসে এখানে তঁহাকে হত্যা করিতে পারেন, তাহা হইলে যুদ্ধ করিয়া লোকক্ষয় করিবার প্রয়োজন হয় না। আমার প্রাণ আপনার হাতে দিতে আমি আসিয়াছি, আর (সিরাজকে দেখাইয়া) যদি আমাব প্রাণ অপেক্ষা বেশী প্রিয় কিছু থাকে, তবে এই সিরাজ, যদি ইচ্ছা করেন, তবে ইহাকেও হত্যা করিতে পারেন ; আমি অকপট হৃদয়ে আমার জীবন, জীবনাধিক প্ৰিয়বস্তু ও সর্বস্ব আপনার হাতে দিয়া আপনার বন্ধুত্বপ্রার্থী হইয়া এই অসমধ্যে স্থাপনার নিদ্রা ভঙ্গ করিলাম।” এই কথার পরে পাঠানদের সমস্ত বিদ্রোহভাব তৃণের মত ভাসিয়া গেল। মুস্তাফা খ প্ৰতিশ্রুত হইলেন, “যে পৰ্য্যন্ত আমি জীবিত থাকিব, সে পৰ্য্যন্ত নবাব সাহেবের নিম্নতম সৈনিকের ঘোড়ার খুরে আমার মাথা বাধা রহিল। যে পৰ্য্যন্ত দেহে প্ৰাণ থাকিবে, সে পৰ্যন্ত আলিবন্দী, তাহার সন্তান ও পরিবারবর্গের হিতার্থ আমার জীবন অৰ্পণ করিলাম।” (সিয়ার মুতীক্ষরিন, ১ম খণ্ড, ৩৮৪ পৃঃ) । আলিবর্দীর এই রাজনৈতিক কায়দা ও চাল সিরাজ একেবারেই জানিতেন না। যখন শেষ মুহুর্তে বিপদ আসিয়া ঘিরিয়া ধরিল, তখন তিনি মীরজাফরের পায়ে পাগড়ী ফেলিয়া কঁদিতে লাগিলেন, কিন্তু সে অসময়ের কান্না ! যদি সময়ে মিষ্ট ব্যবহার করিয়া সকলকে সন্তুষ্ট রাখিতেন, তবে তাহার কেশ স্পর্শ করা সহজ হইত না। একদিকে দুর্লভরাম বিষ ছড়াইতেছিলেন, অপরদিকে জগৎ শেঠ — যাহার বিপুল অৰ্থ বহুলোকের টকি তাহার ভাণ্ডারের দ্বারে বঁাধিয়া রাখিয়াছিল--তিনি জনমত সিরাজের বিরুদ্ধে পরিচালিত করিতেছিলেন। চিরশত্ৰু, ক্রর ও কূটচক্ৰী মীরজাফর-সমস্ত সৈন্যগণকে ঘেসেটি বেগমের অর্থে করতলগত করিয়াছিলেন, ইহার মধ্যে কৃষ্ণচন্দ্ৰ আসিয়া জুটলেন। সমস্ত বঙ্গদেশ এই সিরাজের দোষ । भूरgाय। श । ७ यांलिवण ।