পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शिक-ौकब्रि कथों y মৃহ আল ভাল।) আঁতুড় ঘর সম্বন্ধে, আকাশের অবস্থা সম্বন্ধে, সৰ্বপ্রকার কৃষি সম্বন্ধেএই সকল প্ৰবচন বাঙ্গলার পক্ষে খাটি সত্য। যখন বাঙ্গালীর চাকুরী মিলিতেছে না, তখন আমাদের কৃষির জন্য প্ৰস্তুত হইতে হইবে ; কিন্তু এই প্ৰবচনগুলি কি এখন আমাদের উদ্ধার করা উচিত নহে ? আমার নিকট খনার বচনের একটা সংগ্ৰহ আছে। বাঙ্গলা পঞ্জিকাগুলিতে কিছু কিছু ংগ্ৰহ আছে, কিন্তু চাষার পলীতে না গেলে এ সংগ্ৰহ সম্পূর্ণ হইবে না। শিক্ষিত বাঙ্গালী বাবুর যে সেইটিই মহাভয়ের কথা । বিশ্ববিদ্যালয়ের মৈথিলি ভাষার অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত বাবুয়া মিশ্র জ্যোতিষাচাৰ্য্য মহাশয় বলেন যে তঁহাদের দেশের জ্যোতিষ সম্বন্ধীয় অনেক মৈথিলী পুথিতে ( কোন কোনটি ৩০০/৪০০ বৎসরের পূর্বের ) অথ। “খনা বচনং” বলিয়া বাঙ্গলা ভাষায় রচিত খনার বচন উদ্ধৃত করা হইয়াছে। এই সকল প্ৰবচনের বটতলার কতকগুলি সংস্করণ আছে। তাহাতে বেশী বচন সংগৃহীত হয় নাই। ইহাদের কাল নির্ণয় করা সহজ নহে, বৃহৎসংহিতা ( ৫ম শতাব্দী ), এমন কি পতঞ্জলির মহাভাষ্য (খৃঃ পূ৩০০ শতাব্দী) প্রভৃতি প্ৰাচীন সংস্কৃত পুস্তকে এই সকল প্ৰবচনের মত কতকগুলি বচন সুত্রাকারে পাওয়া যাইতেছে। কিন্তু এতদেশ-প্ৰচলিত খনার বচন নামধেয় প্রবচনগুলিতে ঠিক বাঙ্গলা দেশের কথাই বেশী করিয়া পাওয়া যায়। নারী-চরিত্র, জ্যোতিষিক প্ৰসঙ্গ এবং সামাজিক বিষয্যের প্রবচনই ডাকের কথায় বেশী। এই সকল প্ৰবচনে মাঝে মাঝে প্রাচীন ইতিহাসের ইঙ্গিত আছে। ভগীরথ যে গঙ্গার গতি ফিরাইয়া দিয়া একটা বিরাটু পূৰ্ত্তকৰ্ম্ম সম্পাদন করিয়াছিলেন, পৌরাণিক উপাখ্যানের আড়ালে তাহা চাপা পড়িয়াছো-কিন্তু খনার বচনে “মরৰি যদি মরগে ভগার খাদেশ”-ছত্রটি পাওয়া যায়। “খাদ” অর্থ “খান”-সুতরাং ভগীরথ যে খাল কাটিয়াছিলেন, তাহার ইঙ্গিত এখানে পাওয়া যাইতেছে। আর একটি প্ৰবচন এইরূপ :-“উঠতে শুতে পাশমোড়া, তার অর্ধেক ভীমে ছোড়া, ভবার চৌদ্দ ভাবীর আট, এই সব ক’রে জন্ম কাট । এ যদি না করতে পারিস, ভগার খালে গিয়ে ডুবে মরিসি।” এখনও গোড়া ব্ৰাহ্মণদের রীতি আছে যে গঙ্গায় স্নান করিবার পূর্বে তাহারা এক মুঠ মাটী নদী হইতে তুলিয়া তীরে ক্ষেপণ করিয়া শেষে স্নান করেন। এই বিরাট পুর্তকাৰ্য্যে যে হিন্দুমাত্ৰই সহযোগিতা করিয়াছিল এবং কোন কালে এই ধারা রুদ্ধ না হয়, এজন্য প্ৰত্যেক নাগরিকেরই নিত্য-সাহায্য বাধ্যতামূলক ছিল, এই রীতিত্বারা যেন সেই কথার আভাস পাওয়া যায়। আবার শুভদিন ও অশুভদিন সম্বন্ধে অনেক লক্ষণ নির্দিষ্ট হইয়াছে। কিন্তু বাঙ্গালী জনসাধারণ প্ৰতি মুহুর্তে সমস্ত শাস্ত্রীয় শৃঙ্খল ভাঙ্গিয়া সিংহবিক্রমে বন্ধন মুক্ত হইতে পারে। খনার এই বচনটির প্রতি লক্ষ্য করুন “রাজক দেখবে যখন, কাপড় ছাড়ৰে তখন ৷ নাপিত দেখবে যখন, খেউরি হবে তখন ৷ কিসের তিথি কিসের বার। লাফ দিয়া হও গহিন পার। জল ভাল গঙ্গার জল, বল ৰাল ৰাহ ৰ’ল ৷ আর যত সব ভাসা দিস। খনার বিচারে বুদ্ধিনাশা ৷”