পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

aGSASbSR বৃহৎ বঙ্গ শোচনীয় মৃত্যু সম্বন্ধে অনেক পল্লীগীতি এখনও সে অঞ্চলে প্রচলিত, তাহদের দুইটি আমি প্ৰকাশ করিয়াছি (পুং গীঃ, ৩য় ও ৪র্থ খণ্ড )। “চরকা আমার ভাতার পুত, চরকার দৌলতে আমার দুয়ারে হাতী বাধা,” প্রভৃতি অর্থ-বাচক প্ৰবচন এখনও পাড়াগায়ের মেয়েদেব মুখে মুখে শোনা যায়। মেয়েরা চরকার ভাবে এতটা অভিভূত ছিলেন যে, চাদের কলঙ্কটাকে “র্চাদের মা বুড়ী চরকা কাটিতেছে।” এই ব্যাখ্যা করিয়া ছেলেদের বুঝাইতেন । চরকাব সুতা এত সরু হইত। যে এখনও তাহার যে নমুনা পাওয়া যায়, তাহাতে আশ্চৰ্য হইতে হয় ; অথচ চরকার ব্যবহার তো এযুগে প্ৰায় উঠিয়া গিয়াছে। এখনও বিক্রমপুরের বামুণেব মেয়েরা চরকার সুতায় এরূপ সুন্ম পৈতা তৈরী করেন যে, চার দণ্ডী পৈতার চার পাচটা একটা বড়-এলাচের খোসার মধ্যে অনায়াসে পুরিয়া রাখা যায়। আমি যখন ঢাকা কলেজে পড়িতাম, তখন আমার এক বিক্রমপুর-নিবাসী সহপাঠী বড়-এলাচের খোসাব মধ্যে পূরিয়া তাহার মাতার হাতের কাটা চারিটি পৈতা আমাকে উপহাব দিয়াছিলেন ; সেই চারিটি পৈতাষ ২৪০ হাত সুতা ছিল । সেই সুতা মাকড়সার জালের মত সুন্ম হইলেও বেশ শক্ত ছিল, আমি তাহা বহুদিন ব্যবহার করি যাছিলাম । বাঙ্গলার চবকা ও বাঙ্গলার সূতা বাঙ্গলার গৃহগুলির এরূপ অপরিহাৰ্য্য অঙ্গীয় উপকর হইয়া পড়িয়াছিল যে, লোকে কথাবাৰ্ত্তা, উপমা দেওয়া প্রভৃতি সমস্ত বিষয়েই এই চরকা ও সুতার উত্থাপন করিত। এমন সকল ব্যাপারে সুতার বাঙ্গালার সুতার ব্যবসায়। حصرا كا ( উল্লেখ ও উপমা দেওয়া হইত, যাহা এখন অদ্ভুত ঠেকে; কিন্তু সেইভাবের প্রয়োগ দ্বাবা বুঝা যায়, বাঙ্গলার সুতার কারবারটা কত প্রিয় ও বহুল পরিমাণে প্ৰচলিত ছিল। একটি প্রাচীন বৈষ্ণবগান এইরূপ - একটি বড-এলাচের খোলে ৪৷৫টি পৈতা । “( সে হাটে ) বিকায় নাকে অন্য সুতো । विन्। ऊँीडि नहभद्ध ग्रड ॥ সে হাটের প্রধান তাতি, প্ৰজাপতি পশুপতি, আর যত আছে তাতি—তাদের শুধু যাতায়াত ৷” কিন্তু পুৰুষেরা চরকা কাটিতেন না।--তাহা তীহাদের অপমানের বিষয় ছিল । গ্রন্থের পূৰ্ব্বভাগে দেখাইয়াছি, যদি কোন সেনাপতি যুদ্ধে অক্ষমতা দেখাইতেন, তবে রাজা প্রায়ই র্তাহাকে অপমান করিয়া বলিতেন, “তোমার আর যুদ্ধে যাইয়া কাজ নাই, তোমাকে একখানি চরকা পাঠাইয়া দিব।” বঙ্গদেশে চরকার পাট উঠিয়া গেলেও আসামের মেয়ের এখনও চরকা ছাড়েন নাই , তাহারা রেশমের উপর এখনও যেরূপ সুন্ম কারুকাৰ্য্য করেন, তাহা অতি সুন্দর। চাদরের উপর কন্ধা বডই শোভন হয়। বড় ঘরের মেয়েদের হাতের কাজ দেখাইয়া বরপক্ষকে সন্তুষ্ট করিতে হয়, তবেই ভাল বিবাহ হয়। বাঙ্গলার মেয়ের এখন বিলাতীর নকল করিয়া ‘লেস’ তৈরী করেন এবং যাহা কাচিৎ ব্যবহারে লাগে তাহাই