পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিক্ষা-দীক্ষার কথা Sgot বাদসাহগণের প্ৰিয়পাত্র হইতেন । গোলাম হুসেন দেখাইয়াছেন যে, আরজেব তঁহার নানা প্রকার অত্যাচারের অনুমোদনে গোড়া মৌলভীদিগের নিকট উৎসাহ পাইতেন। তাহার কাফের-দলনের সদিচ্ছার জন্য ইহারা তাহাকে নিরন্তর "বিশ্বাসী at” (Faithful Emperor) satise fa utes (The cherisher of religion) ইত্যাদি উপাধি দিয়া স্তোকবাক্য বলিতেন, ফলতঃ ইহাদের দ্বারা দেশের ঘোর অনিষ্ট সাধিত হইয়াছিল। আরজেবের শত্রুরাও বলিতে বাধ্য যে, তিনি অতি দৃঢ়হন্তে শাসন করিতেন, সুতরাং তৎকৃত অভায়গুলিবারাও দেশের শাসনযন্ত্র শিথিল হইতে পারে নাই। কিন্তু পরবর্তী সম্রাট্রগণের অর্থগৃধুতা এবং শক্তিসামর্থের অভাবে দেশ উত্তরোত্তর ধ্বংসের মুখে চলিতে লাগিল ; যাহারা আইনজ্ঞ ও সুবিচারক তাহারা ক্ৰমশঃ হটিয়া গেলেন এবং নিতান্ত দুষ্টচরিত্র লোকেরা সিংহবিক্রমে (2jT:FfãNşN TtRTS Visst fra I (“At last the office of the Cazy or Judge and that of Sadar or great Almoner, with many other Magistratures came to be publicly put up to sale, so that the people skilled in law and in distributive justice, entirely disappeared from the land; nor was anything else thought of, but how to bring money to hand by any means whatever.” (Mutakharin, Vol. III, p 160.) Rifkyvyttrict R অর্থগৃষ্ণুতার ফলে হিন্দু জমিদারদিগের জন্য ‘বৈকুণ্ঠের” ব্যবস্থা হইতে সেই অত্যাচার কতক পরিমাণে বুঝা যাইবে-সামান্য হিন্দু প্ৰজারা যে কত সহিয়াছিল, তাহা না বলাই ভাল। মোগলের সাম্রাজ্যতন্ত্র অর্থকেই মূলমন্ত্র করিয়া সমস্ত প্রদেশে এই বিষের আওতা প্রসারিত করিয়াছিল। সিরাজউদ্দৌলার রাজত্বের অব্যবহিত পূর্বেও হিন্দুরা সামরিক ব্যাপারে প্রাধান্ত লাভ করিয়াছিলেন। তাহদের স্বাধীন হইবার প্রচেষ্টা অবশ্যই নিরস্ত হইয়া গিয়াছিল, কিন্তু তাহারা শৌর্য্যেবীৰ্য্যে তখনও বঙ্গেশ্বরগণের দক্ষিণহস্তস্বরূপ ছিলেন। দেওয়ানী বিভাগে -বিশেষতঃ রাজস্বসম্বন্ধীয় সমস্ত কাৰ্য্যে—তাহারা অপ্ৰতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। গুণপন দেখিয়া নবাবেরা জাতি বা ধৰ্ম্ম গ্ৰাহ না করিয়া ইহাদিগকে উচ্চতম পদ দিয়াছিলেন। মোগল ও পাঠান উভয় জাতির মধ্যে যেরূপ অবিশ্বাস ও কৃতঘ্নতার দৃষ্টান্ত ইতিহাসের পৃষ্ঠা কলঙ্কিত করিতে দেখা যায়, হিন্দুদিগের মধ্যে সেইরূপ বিশ্বাসের অভাব কাচিৎ দৃষ্টি হইয়া থাকে। শুধু সিরাজের সর্বনাশসাধনে কয়েকজন হিন্দু বড়লোক মুসলমান-চক্রীদের সহিত যোগ দিয়াছিলেন। মুসলমানের অধিকার-বিলোপের পর সেই সকল বিক্ৰান্ত ওমরাহ ও নবাব কোথায় গেলেন ? বঙ্গদেশের জমিদার ও সন্ত্রান্ত ব্যক্তিদের তালিকায় তাহারা মুষ্টিমেয় হইয়া পড়িলেন। শত অত্যাচারেও হিন্দু স্বীয় চরিত্ৰৰল ৰজায় রাখিয়াছেন, এজন্যই তাহারা এপৰ্যন্ত টিকিয়া আছেন, অন্য কোন জাতি হইলে ভীষণ অত্যাচারের ফলে হয় তাহারা বিজেতাদের সঙ্গে মিশিয়া তাহাদের নিমন্তরে কোনরূপে বাচিয়া থাকিবার একটা অবকাশ করিয়া লাইতেন, নতুবা নির্মূল হইয়া যাইতেন। কতক পরিমাণে ধৰ্ম্মচ্যুত বা ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়াও আজও বঙ্গে হিন্দুৱাই প্ৰবল।