পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচন্দ্ৰ ও তৎপরবত্তী যুগে বাঙ্গলা-সাহিত্যের অবস্থা Ye O(ł ভীষণ-দর্শন শক্তিমূৰ্ত্তি বাঙ্গলার “মা” হইয়া আছেন। এক সময়ে কবিচন্দ্ৰ বাল্মীকির যুদ্ধকাণ্ডটাকে সংকীৰ্ত্তনের ক্ষেত্রে পরিণত করিয়াছিলেন, বাঙ্গলায় রামপ্ৰসাদ প্ৰভৃতি শাক্ত কবিগণ সেইরূপ শেলশূলধারিণী মহাশক্তিকে যশোদার মত জননী করিয়া তুলিয়াছেন। এই শক্তি এখানে উমা । বাঙ্গলার ঘরে ঘরে অষ্টমবর্ষীয়া গৌরীদের মাতা শরৎকালের শেফালিকার ষ্ঠায় যে অশ্রুবর্ষণ করিতেন, বাঙ্গলার শারদীয় উৎসবে সেই স্নেহাতুরা জননীর মনের আকুলী ব্যাকুলী শত শত আগমনী গানে ব্যক্ত হইয়াছে। রামপ্ৰসাদের সুরে বাঙ্গলার লক্ষ লক্ষ বিপন্ন সন্তানের “মা”-ডাক মূৰ্ত্ত হইয়া উঠিয়াছে——সমস্ত বাঙ্গলা দেশ তাহার গানে সাড়া দিয়াছে। রাজনৈতিক বিপ্লব ও দুৰ্ভিক্ষাদি নানা বিপদে পড়িয়া বাঙ্গলা তখন নয়নজল দিয়া মাতাকে পূজা করিতে চাহিয়াছিল--রামপ্রসাদের গান সেই শত সহস্ৰ বঙ্গসন্তানের নয়নজল-আকুলকণ্ঠের “মা”-ডাক । রামপ্ৰসাদ হালিসহরে জন্মগ্রহণ করেন, কথিত আছে তিনি কলিকাতা সোনাগাছির দেওয়ান-বাড়ীতে মুহুরীগরী করিতেন, কিন্তু হিসাবের খাতায় “দে মা আমায় তবিলদারী। আমি নিমকহারাম নই। শঙ্করী” প্ৰভৃতি গান টুকিয়া যাইতেন, দেওয়ান মহাশয় তাহার অসাধারণ শক্তি দেখিয়া তাহার মাসিক ৩০২ টাকা বৃত্তি নিৰ্দ্ধারিত করিয়া তাহাকে চাকুরীর দায় হইতে নিস্কৃতি দেন । তৎপরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ তাহাকে কতকটা জমি নিষ্কর দান করিয়া র্তাহার গ্ৰাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করেন । ইহাও প্ৰবাদ যে সিরাজউদ্দৌলা রামপ্ৰসাদকে স্বীয় নৌকায় ডাকিয়া আনিয়া তাহার মুখে মাতৃসংগীত শুনিয়া প্রীত হইয়াছিলেন। ১৭৭৫ খৃষ্টাব্দে কালীবিসর্জনের সময়ে ভাবের পাগল রামপ্ৰসাদ দেবীমূৰ্ত্তির সঙ্গে সঙ্গে জলে ঝাপাইয়া পড়িয়া দেহত্যাগ করেন । রাজা রাজবল্লভেব জ্ঞাতি জয়নারায়ণ সেনে । হরিলীলা ভারতচন্দ্রের বিদ্যাসুন্দর বা অন্নদামঙ্গলের সমকক্ষ কাব্য না হইলেও তাঁহাতে সেই যুগের উপযোগী গুণ অনেক আছে। সামাজিক চিত্রগুলি হবিলীলায় খুব ফুটিয়াছে। কবি স্বয়ং রাজবংশোদ্ভূত ও বিশিষ্ট অবস্থাপন্ন। তিনি যে খুব বৈভবশালী ছিলেন, তাহ "হরিলীলা”র রাজার হারের মূল্যনির্ণয়বর্ণনায় যথেষ্ট প্রসাধিত হইয়াছে। সেই স্থানটি উদ্ধৃত করিলাম। :-- “রাণীর গলার মণিময়ানন্দ হার। তিনি হারে ছয় লাহরে মুক্ত বিশ হাজার । বিশ বিশ রাত্তি প্ৰতি মুক্তার ওজন। তাথে মাণিকের বন্ধ অরুণ কিরণ ৷ পঞ্চব্বিশ পঞ্চবিশ বন্ধ প্ৰতি হারে। দেড়শত হৈল বন্ধ লিখিতে সুমারে। মধ্য হয়ে যুক্‌ধুকি সেহি মণিময়। লঘুতরা বিশ রাত্তি লাটুকরের মুক্তি। অন্ধকারে দীপ প্ৰায় প্রকাশিল জ্যোতি। মধ্যেতে জ্বলিছে অতি শ্বেত হীরা খান। বিশ মাষা আভাপুর্ণচত্রের সমান ৷ মাৰা যার বিশ হাজার আর জব যার। মালার মেরুতে তিন ঘুণ্টিহি মুক্তার ৷ সেই তিন বিশ রক্তি হইল ওজনে। চন্দ্রভান দেখি তাহা DDBDB BB BDB S DBDBi kDB DB BDD DBDDDSS SYBD D DBD BDB BiDuGB LSL আনন্দময়ী জয়নারায়ণের ভ্রাতুষ্পপুত্রী, তাহার রচিত অনেকগুলি অংশ। হরিলীলায় স্থান পাইয়াছে—তাহা সংস্কৃতাত্মক শব্দপূর্ণ এবং মহিলা-কবির পাণ্ডিত্যের পরিচয় প্ৰদান করিতেছে। বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (৫ম সংস্করণ), ৫১২-১৩ পূঃ দ্রষ্টব্য।