পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y OSR বৃহৎ বঙ্গ ও সাহিত্যে তাহার কতকাংশের নকল দেওয়া হইয়াছে। ত্রিপুরার রাজাদের বাঙ্গলায় লিখিত অনেক তাম্রশাসন রাজমালায় দৃষ্ট হয়। সহজিয়ারা বহুপূৰ্ব্ব হইতে র্তাহাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধৰ্ম্মব্যাখ্যা-সম্বলিত পুস্তিকা বাঙ্গলা গদ্যে লিখিতেন। স্মৃতিশাস্ত্রের অনুবাদ বাঙ্গলা গদ্যে রচিত হইত। রাধাবল্লভ শৰ্ম্ম প্ৰায় তিন শত বৎসর পূর্বে সমস্ত স্মৃতিগ্ৰন্থ গদ্যে অনুবাদ করিয়াছিলেন। সে বাঙ্গলা সহজ, ছত্রগুলি একেবারেই জটিল নহেঅল্পসংখ্যক শব্দে পরিসমাপ্ত । তাহা ছাড়া দলিল ও চিঠিপত্র আমরা দুই তিন শত বৎসর পুর্বের অনেক পাইয়াছি। গদ্য সাংসারিক প্রয়োজন ও ধৰ্ম্মব্যাখ্যার জন্য ব্যবহৃত হইলেও উহা দেড়শত বৎসর পূর্বেও সাহিত্যের আসরে বিশেষ কোন স্থান লাভ করে নাই। ৫০০ বৎসর পূর্বের কবি চণ্ডীদাসেরও সহজতত্ত্বজ্ঞাপক বাঙ্গলা গদ্যে লিখিত পাতড়া পাওয়া গিয়াছে। কিন্তু যে দেশে গণিতের সূত্ৰ পৰ্যন্ত কবিতায় রচিত হইত, সে দেশে গদ্য বিশেষ আদৃত হয় নাই, তাহা বলা নিম্প্রয়োজন। ইংরেজদের আগমনে— ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ সংস্থাপনের পর হইতে বাঙ্গলা গদ্যসাহিত্য বিশেষ প্রসার লাভ করিয়াছে। এই সময়ের ( ১৮০০ খৃঃ ) কিছু পূৰ্ব্ব হইতেই কেরি প্রভৃতি ইংরেজ লেখকগণ বাঙ্গলা গদ্যসাহিত্যের পরিপুষ্টির জন্য উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়া গিয়াছিলেন । এখন পৰ্য্যন্ত বাঙ্গলা গদ্যরূপ ইংরেজী বাগানের ফলই আমরা খাইতেছি ।