পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Se 8R বৃহৎ বঙ্গ এসকলই বিরাশির ওজন ছিল। পলাশীর যুদ্ধের প্রাক্কালে বাজার দর কিরূপ ছিল, ইহা হইতে তাহা বুঝা যায়। “সমসের গাজির গানে।” অনেক কৌতুকাবহ কথা আছে। চন্দ্র ও উৎসব নামে দুই নাপিত তাহাকে নিদ্রিত অবস্থায় খেউরি করিয়া পুরস্কার পাইয়াছিল। ক্ষেীর-কাৰ্য্যের সময়ে তাহার ঘুম ভাঙ্গে নাই। তিনি স্বীয় প্রাসাদে স্কুল খুলিয়া বহু ছাত্রকে শিক্ষা দিতেন, তাহাতে সন্দ্বীপ হইতে এক অন্ধ হাফেজ আনাইয়া তিনি কোরান পড়াইতেন, হিন্দুস্থান হইতে মৌলভি আনাইয়া আরবি পড়াইবার ও জুগিদিয়া হইতে গুরু মহাশয় আনাইয়া বাঙ্গল এবং ঢাকা হইতে মুনসী আনাইয়া পােরশী পড়াইবার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। প্ৰাতে ৬টা হইতে ১০টা এবং মধ্যাহ্নে ১২টা হইতে ৪টা,-পড়িবার এই সময় নিদিষ্ট করিয়া দিয়াছিলেন। গাজি শাসন-সংক্রান্ত এরূপ কড়াকড়ি নিয়ম করিয়াছিলেন যে, চোর-দসু্যর উৎপাত ত্রিপুরা রাজ্য হইতে অন্তহিত হইয়াছিল। সমসের গাজির এক কন্যাকে ঢাকার নবাব বিবাহ করেন। ইহার পরে পুনঃ পুনঃ মুর্শিদাবাদে যাইয়া গাজিকে আলিবন্দি খা নবাবের সঙ্গে দেখা করিবার হুকুম আসিতে লাগিল। ঢাকার নবাবের নিষেধে গাজি প্রথমতঃ তথায় যাইতে দ্বিধা বোধ করিতে লাগিলেন, কিন্তু অবশেষে এক সন্ন্যাসীর প্ররোচনায় গাজি ১৭৫১ খৃঃ অব্দে মুর্শিদাবাদ গেলেন। এদিকে আবু বখর নবাবকে বুঝাইয়াছিলেন “ভাটীর বাঘ বন্দী করি ছাড়ি দিবা কেনে। আসিয়া মারিবে দেশ সম্মুখে সে রণে। কাড়ি নিল দক্ষিণ-শিক জমিদারে মারি। রাজবংশ খেদাইল রোসনাবাদ ( ত্রিপুরা) কাড়ি । অন্যাপি ভাল আছে বন্দী করি আনি। নতুবা পশ্চাতে তব হবে পেরিশোনি।” ভীত হইয়া নবাব নিমরাজি হইলেন, বিনা অপরাধে গাজিকে তোপের মুখে ফেলিয়া হত্যা করা হইল। “দুঃখীরাম চণ্ডাল বলবান অতি । গাজীর সহিত তার আছিল পীরিতি। পাঁচ শত লোক জন তার সঙ্গে ছিল। গাজির পরিবার সেই দেশে 'अनि द्धि।” কৃষ্ণমাণিক্য ১৭৬০ খৃঃ অব্দে রাজা হন । রামগঙ্গা বিশারদ নামক এক পণ্ডিত ‘কৃষ্ণমালা” নামক পুস্তকে ইহার বিস্তৃত কাহিনী লিখিয়াছেন। »ʻh tbo 9:— কিন্তু ইংরেজাধিকারের পূর্ব পৰ্য্যন্ত আমি এই পুস্তকের বিষয় নির্দিষ্ট করিয়াছি, সুতরাং এই স্থানে ত্রিপুরার ইতিহাস শেষ করিলাম । আমরা ত্রিপুর-রাজ্যের ইতিহাসে বাঙ্গালী জাতীর গৌরব করিবার অনেক বিষয় পাইয়াছি। এই রংশ শুধু ভারতের প্রাচীনতম রাজ বংশ নহে, ইহার কীৰ্ত্তিকথা চিরস্মরণীয় এবং বঙ্গের ইতিহাসের কয়েকটি পৃষ্ঠ উজ্জ্বল করিতেছে। ইহার কয়েকটি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হইলে তাহা বাঙ্গালী জাতির দর্শনীয় পুণ্যস্থানে পরিণত হইবে। (১) যেখানে প্ৰতীত হইতে ৫ম স্থানীয় মহারাজ হিমতির ( হামতিরফার) শ্মশান লোক-স্মৃতিতে অক্ষয় করিবার জন্য “বৈকুণ্ঠপুর” স্থাপিত হইয়াছিল, (২) মহারাজ, ত্রিপুরার গৌরব-কথা।