পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গের প্রাদেশিক ইতিহাস-কোচবিহার o ASD আসিলেন, রাজদ্বারীরা তঁহার দীনহীন বেশ দেখিয়া অপমান করিয়াছিল। রাজা জানিতে পারিয়া অত্যন্ত লজ্জা পাইয়াছিলেন এবং শিক্ষার মৰ্যাদা যাহাতে বৃদ্ধি পায় তজ্জন্য পল্লীতে পল্লীতে পাঠশালা স্থাপন করিয়াছিলেন ; তাহার পুত্র ও স্বগণবর্গের জন্য উচ্চশিক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা হইয়াছিল। রাজারা বহুপত্নীক ছিলেন । এই রাজার কোন মহিষীর গর্ভে এক পরমসুন্দরী কন্যা জন্মগ্রহণ করেন ; বড় হওয়ার পরে ইহাকে রাজা আর দেখেন নাই । হঠাৎ অন্তঃপুরের উদ্যানে পরমসুন্দরী ষোড়শী মুক্তি দেখিয়া ইনি কামাতুর হইয়া তাহাকে ধরিতে যান, রাজকুমারী বিশেষ লজ্জায় আৰ্ত্ত হইয়া রাজার হাত ছাড়াইযা অন্তঃপুরে প্রবেশ করেন। রাজ-উপাখ্যানে জয়নাথ মুন্সী এই ঘটনা সম্বন্ধে লিখিযাছেন,-“রাজকুমারী, তাহাব বিবাহের যে স্বৰ্ণ চালুনি ও পাঁচটি স্বর্ণ দিয়াড় অর্থাৎ দীপদান ছিল, তাহা এবং স্বর্ণখাল ও তীক্ষ অস্ত্ৰ সমেত নদীর তটে গমন করিয়া দিযড় প্ৰজ্বলিত করিয়া স্তনদ্বয় অঙ্গদ্বাবা ছেদনপূর্বক স্বর্ণ থালাতে রাখিযা সহচরীকে দিয়া কহিলেন, “পিতাকে দিও, তিনি তঁাহাব যাহা বাঞ্জিত তাহা নেন । আমি গমন করিলাম।” ইহা বলিয়া চালুনিবাতি মস্তকে করিয়া নদীতে মগ্ন হষ্টলেন । ঐ নদীব নাম হইল কুমারী নদী-ইহা অদ্যাপি আছে। সহচরী থাল সমেত বাজাব নিকট আসিয়া বলা মাত্র মহারাজ হাহাকাব্য শব্দ করিয়া বোদন কবিতে লাগিলেন। মুহুমুহুঃ মূৰ্চা হইতে লাগিল। শোকে ও লজ্জাতে মৃত্যুতুল্য হইয়া কহিতে লাগিলেন, “হে মহাদেব, ব্ৰহ্মা সন্ধ্যাতে উপগত হওয়ার চেষ্টা করাতে তুমি উদ্ধাশির ছেদন করিয়াছিলে, আমাকে কেন শূলে আঘাত কর না ।” মন্ত্রিবর্গ নানাপ্রকার প্রবোধ-বাক্যে সাস্তুনা করিল, ফলে মহারাজ পুনরায় রাজসভাতে তাদৃক বসিলেন না ; লজ্জিত ভাবেই অল্পকাল ছিলেন ; পাঁচ বৎসর রাজত্ব করিয়া ১১৭ শকে (কোচরাজ-শক } যাহাতে ১০৩৩ সন বাঙ্গল, ১৫৪৮ শকাব্দ হয়, রাজা বীরনারায়ণ দেহ পরিত্যাগ কবিয়া কৈলাসগামী হইলেন । ” বীরনারায়ণের পুত্ৰ মহারাজ প্ৰাণনারায়ণ ১৬২৫ খষ্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন। প্ৰাণনারায়ণের সময় মুসলমানেরা পুনরায় কোচবিহার রাজ্যে হানা দিয়াছিল। রাজা Sofesse- d GIe- কিছুকাল পলাইয়া থাকিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। তাহার বিশ্বাসSue ঘাতক জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ বিষ্ণুনারায়ণ র্তাঙ্গার লুকাইবার স্থানের সন্ধান দিয়াছিলেন । এই ভাবে তিনি ধূত হইলেন, কিন্তু কোনক্রমে মুক্তি পাইয়া প্ৰবল সৈন্য লইয়া আসিয়া মুসলমানদিগকে স্বরাজ্য হইতে তাড়াইয়া দিলেন। মীরজুমা বহু সৈন্য লইয়া কোচবিহার রাজ্য দখল করিতে আসিতেছিলেন, কিন্তু পথে তাহার মৃত্যু ঘটাতে মুসলমানেরা ফিরিয়া গেল। তদবধি মহারাজ প্ৰাণনারায়ণের রাজ্যে আর কোন উৎপাত হয় নাই। জয়নাথ মুন্সী লিখিয়াছেন :-“রাজা প্ৰাণনারায়ণ ব্যাকরণ ও স্মৃতি সাহিত্যে অদ্বিতীয় পণ্ডিত, দ্রুতকবি, শ্রুতিধর। মহারাজ বীরনারায়ণ যত বালককে পড়িতে দিয়াছিলেন, সকলেই পণ্ডিত হইল। রাজসভাতে অনেক পণ্ডিত ;-তন্মধ্যে বিশেষ পাঁচজন, তঁহাদের দ্বারা পঞ্চরত্ন সভা হইল। রাজা বিক্ৰমাদিত্যের পর এমত পণ্ডিতের সভা আৰ বৃহৎ বঙ্গ/৭৩ ब्रॉऽांद्र यडू छ कॉर्षी ७ তৎফলে মৃত্যু।