পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গের প্রাদেশিক ইতিহাস-শ্ৰীহট্ট » 08) উত্তরাধিকারী করিয়া মনস্তুষ্টি জ্ঞাপন করিতেন। ১৪৯৬ খৃঃ অব্দ হইতে ১৫৫৬ খৃঃ অব্দ পৰ্য্যন্ত এই ভাবে শ্ৰীহট্টের শাসনকাৰ্য্য চলিয়াছিল। সৰ্ব্বানন্দ নামে এক সন্ত্রান্ত কায়স্থ মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়া সরওয়ার খাঁ নাম গ্ৰহণ করেন, পূৰ্বোক্ত |ায় দৃষ্ট হইবে তিনিও এই কানুনগোদের একজন। সরওয়ার খার পুত্র মীর খা, তৎপুত্র ইউসফ খাঁ ( ১৫২৬ খৃঃ)- এক বংশের এই তিনজন কানুনগো-পদ প্ৰাপ্ত হইয়াছিলেন। ইউসুফ খাঁর সময়ে আনন্দনারায়ণ গুপ্ত নামক এক ব্যক্তি শ্ৰীহট্টের দেওয়ান ছিলেন। এই আনন্দনারায়ণের সাহায্যে পরবর্তী কানুনগো খোয়াজ ওসমান ইটাব রাজা সুবিদনারায়ণকে পরাজিত করিয়া তারপ ও ইটা অধিকার করেন। জাহান খাঁ কানুনগো অল্প-বয়স্ক থাকাতে রাজেন্দ্ৰ, বনুদাস, রুদ্রদাস ও তরপের জমিদার সুবিদারাম প্ৰকৃতপক্ষে রাজ্য শাসন করিতেন । কিন্তু আকবর শাসন-বিভাগ ও রাজস্ব-বিভাগ পৃথক করিলেন ; তদনুসারে কানুনগোগণ তঁহাদের ক্ষমতা হারাইলেন। তাহারা দেওয়ান হইয়া রাজস্ব-বিভাগের কৰ্ত্ত হইলেন, এবং শাসন-কৰ্ত্ত হইলেন “আমিল” নামে ফৌজদারগণ । আকবরের সময়ে শ্ৰীহট্টের রাজস্ব ১,৬৭,০৪০২ টাকা অবধারিত হইয়াছিল। শ্ৰীহট্টের ‘আমিল’গণের শিলমোহর হইতে ৪০ জনের নাম সংগৃহীত হইয়াছে। মোট আমিল বোধ হয় ৬০ জন ছিলেন, তন্মধ্যে আচু্যতবাবুর পুস্তকে ৪৩ জনের নাম-ধামের তালিকা আছে। কোচবিহারের রাজা নরনারায়ণ র্তাহার। ভ্ৰাতা চিলা রায়ের সাহায্যে একজন আমিলকে পরাস্ত করেন। যুদ্ধস্থলেই আমিল নিহত ও র্তাহার ভ্রাতা বন্দী হন। নরনারায়ণ শ্ৰীহট্টের ২০০ ঘোটক, ১০০ হস্তী, তিন লক্ষ টাকা, দশ হাজার মোহর কর-স্বরূপ পাইবেন-এই সৰ্ত্তে উক্ত ভ্ৰাতা মুক্তি লাভ করেন । ইহার পরবর্তী শ্ৰীহট্ট-শাসনকর্তা ফতে খাঁর সহি শ, ত্রিপুর-রাজ অমরমাণিক্যের যুদ্ধের কথা ‘ত্রিপুর-রাজ্য” অধ্যায়ে সবিস্তারে বর্ণিত হইয়াছে। ফতে খাঁ এই যুদ্ধে পরাস্ত হইয়াছিলেন। ফতেখার পরে মোহাম্মদ জামন তুয়ালদার, সৈয়দ ইব্রাহিম ( ১৬৫৭ খৃঃ), নবাব লুৎফউল্লা খাঁ বাহাদুর ( ১৬৬৩ খৃঃ), নবাব জান মোহাম্মদ (১৬৬৭ খৃঃ), নবাব ফরহাদ খা ( ১৬৭০ খৃঃ), নবাব মহাফিতা খা, নবাব নুরউল্লা খা (১৬৭৮ খৃ: ) নবাব সৈয়দ মোহাম্মদ আলি খাঁ, কাইমজঙ্গ (১৬৮০ খৃঃ), নবাব আব্দুরহেম খা (১৬৮০ খৃঃ), নবাব সাদক বাহাদুর ( ১৬৮৬ খৃঃ), নবাব কক্তলব খা (১৬৯৮ খৃঃ), নবাব আহমদ মজিদ ( ১৬৯৯ খৃঃ), নবাব কারগুজার খা (১৭০৩ খৃঃ)-এই কয়েকজন আমিলের নাম পাওয়া যায়। ইহাদের সকলেরই ভূমি-দানপত্র পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে দেখা যায়, ইহারা নিৰ্বিচারে যোগ্যতাঅনুসারে হিন্দু ও মুসলমানদিগকে ভূমি দান করিয়া গিয়াছেন। আরাঞ্জেবের পরে নবাব নবাব হরেকৃষ্ণ-১৭০৯- তানিব আলি খাঁ ও নবাব শুকুরউল্লা খাঁ আমিল হইয়াছিলেন ; শুকুরউল্লা খাঁর পরে একজন হিন্দুকে এই উচ্চপদ দেওয়া হয়, ইহার নাম নবাব হরেকৃষ্ণ, উপাধি মনসুর-উল-মুলুক বাহাদুর। যে বংশে সৰ্ব্বানন্দ জন্মগ্রহণ করিয়া মুসলমান-ধৰ্ম্মগ্রহণেব পর সরেওয়ার খা নামে শ্ৰীহট্টের শাসনকৰ্ত্ত হইয়াছিলেন, সেই বংশে कffभया।