পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

à 088 বৃহৎ বঙ্গ লাউড় অতি প্ৰাচীন রাজ্য- কথিত আছে লাউড়-পর্বতে ভগদত্তের রাজধানী ছিল। খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে বিজয়-মাণিক্য নামে এক রাজা তথায় রাজত্ব করিতেন । র্তাহার একটি রৌপ্যমুদ্রায় “রাজা বিজয়মাণিক্য শ্ৰীশ্ৰীলক্ষ্মী দেব্যা—শক ১১১৩” লেখা পাওয়া গিয়াছে, সুতরাং উহা ১১৯১ খৃষ্টাব্দের, এই রাজা সম্ভবতঃ ত্রিপুর-রাজাদের বংশীয় হইবেন । কিন্তু বিজয় রাজার শাখা কোথায় কি ভাবে বিলুপ্ত হইল জানা যায় নাই। তারপরে আমরা একেবারে চতুর্দশ শতাব্দীর শেষভাগে আসিয়া পড়ি। তখন দিব্য সিংহ নামক এক ব্ৰাহ্মণ রাজা লাউড়ে রাজত্ব করিতেছিলেন। ইহারই মন্ত্রী কুবের পণ্ডিত বিখ্যাত “দত্তক-চন্দ্ৰিকা”-গ্ৰন্থপ্রণেতা কুবের পঞ্চানন— অদ্বৈতাচাৰ্য্যেব। পিতা । দি ব্যসিংহ উত্তর কালে বৈষ্ণবমন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া “কৃষ্ণদাস” নাম গ্ৰহণ করিয়াছিলেন এবং “বিষ্ণুভক্তিচন্দ্ৰিকা” নামক ভাগবতের সাবোদ্ধার-সংবলিত গ্ৰন্থ সঙ্কলন করেন (“লাউড়িয়া কৃষ্ণদাসেব ভক্তি লীলা সূত্ৰ, যে গ্ৰন্থ শুনিলে হয়। ভুবন পবিত্র।”) ইহাব পরে জগন্নাথপুবে গোবিন্দসিংহ নামক এক ব্ৰাহ্মণ বাজার উল্লেখ পাইতেছি, ইনি পঞ্চদশ শতাব্দীর লোক, এবং তৎসময়েই বানিয়াচঙ্গের কেশব মিশ্র নামক আব্ব এক রাজার কথা জানিতে পারি। এই দুই শাখাই এক মূল ব্রাহ্মণ-বংশেব বলিয়া অনুমিত হয। গোবিন্দসিংহেব সঙ্গে কেশব মিশ্রেীর বংশধর জখসিংহের ঝগড়া হয়। সম্রাট জাহাঙ্গীর গোবিন্দসিংহের অবাধ্যতার শাস্তিস্বরূপ তঁহাকে মুসলমান-পৰ্ম্মে দীক্ষিত করি যা “হাবিব খা” নাম দেন ; তাহার ভ্রাতা বিজয়ের সহিত সম্পত্তিব সীমা লইয়া বিবাদ করেন। ইতিমধ্যে হবির খা র্তাহার পুত্রেব সািহত বিজয্যের কন্যার বিবাহের প্রস্তাব করিয়া পাঠান। ইহাতে বিজয় নিতান্ত ক্রুদ্ধ হইলেন, কিন্তু মৌখিক আত্মীয়তাব ভান কবিয হবিব খাব পুত্ৰ আলম খাকে স্বীয় বাড়ীতে আনিয়া বন্দী করেন। আলম অতি রূপানান ছিলেন। বিজয়ের কন্যা কৌশলক্ৰমে তাঁহাকে কাবাগাের হইতে উদ্ধার কবেন। উভয় ভ্রাতার দ্বন্দের ফলে বিজয়সিংহ নিহত হন এবং হবির খাঁর বংশ প্রবল হইয়া উঠে । পূৰ্ব্বে এই লাউ ভূ-রাজ্য বহু বিস্তৃত ছিল! কিন্তু ১৭২২ খৃষ্টাব্দে ইহার সঙ্কচিত পরিমাণ ২৮টি পরগনা এবং অনেক পতিত জমি লইয়া গণ্ডীবদ্ধ হইয়াছিল। ঐ সময়ে ইহার মালিক ছিলেন আনোয়ার র্থ, তিনিই সর্বপ্রথম “দেওয়ান” উপাধি প্ৰাপ্ত হন, তদবধি বানিয়াচঙ্গের “দেওয়ান”গণ ঐ নামে পরিচিত হইয়া আসিতেছেন। এখানে আর একটি কথা বক্তব্য। আলম খাঁ ও বিজয়-কন্যার ঘটনাটিকে রূপান্তরিত কারিয়াই বোধ হয় একটি গীতিক বিরচিত হইয়াছিল (মৈমনসিংহ-গীতিকা, ૦૫ ૭ ) | এই সকল ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখা যাইবে যে, যদিও শ্ৰীহট্ট জেলার অনেক নবােবই মুসলমান, তথাপি ইহাদের অনেকেই ব্ৰাহ্মণ-রাজকুল-জাত। যে সময়ে সমস্ত বঙ্গদেশ মুসলমানদের অধিকৃত হইয়াছিল-সে সময়েও শ্ৰীহট্ট বহুদিন পৰ্য্যন্ত ব্ৰাহ্মণাধিকারে ছিল, এজন্যই এই প্রদেশে বহু পণ্ডিত ও গুণী জন্মিয়া স্মৰণীয় হইয়া আছেন। শ্ৰীহট্ট এক সময়ে নানারূপ শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। লস্করপুরের উনি চাদর, व्लांgg