পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y) 08bro বৃহৎ বঙ্গ দীক্ষা পাইয়া বিষ্ণুভাগবত (চৈতন্য-ভাগবত ), ও চৈতন্য-চরিতামৃতাদি গ্রন্থের বিশেষ ভক্ত ও অনুরাগী হুইয়া পড়িলেন। ১৭৪১ শকের (১৮১৯ থ: ) পূর্বে মণিপুররাজ মারজিৎ কাছাড়পতি গোবিন্দচন্দ্ৰ নাবায়ণকে রাজ্যচ্যুত করিয়া উক্তদেশ অধিকার করিয়াছিলেন। এখন মারজিৎ স্বীয় ভ্রাতা চৌরজিৎ, গম্ভীরসিংহ ও ৱিশ্বনাথসিংহের সঙ্গে একত্ৰ হইয়া সুবিস্তৃত কাছাড় ও মণিপুর রাজ্যে রাজত্ব করিতে লাগিলেন। এই সময়ে মণিপুরের রাজা ব্ৰহ্ম-নৃপতির সঙ্গে বিবাদে প্ৰবৃত্ত হন। ব্ৰহ্মের রাজা কাছাড়া জয় করিলেন। গভীরসিংহ প্ৰভৃতি ভ্ৰাতৃগণ ইংরেজদিগের শরণাপন্ন হইলেন। ইংরেজ সরকার ইহাদিগকে আশ্ৰয় দানপূর্বক “গভীর সিং লেভি” নামক একদল সৈন্যের সৃষ্টি করিয়া ব্ৰহ্মরাজের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যান্দিবোন নগরে ইংরেজদের সঙ্গে সন্ধি হয়, তাহাতে ব্ৰহ্ম-রাজ গম্ভীরসিংহকে মণিপুরের রাজা বলিয়া স্বীকার করিতে বাধ্য হন। গম্ভীরসিংহ পুরুষ-সিংহ ছিলেন । ইংরেজেরা মুক্ত কণ্ঠে ইহার বীরত্বের কথা স্বীকার করিয়াছেন। (Wilson’s, IBurmese War, p. 207) || ব্ৰহ্মযুদ্ধের পর ব্ৰহ্মদেশের পশ্চিমে কাইবো পরগনা গম্ভীরসিংহের রাজ্যের অন্তর্গত হয়, যদিও ব্ৰহ্ম-রাজার দাবী অস্বীকার করিতে না পারিয়া ঐ পরগনা গভর্নমেণ্টকে ফিরাইয়া দিতে হয়, তথাপি গম্ভীরসিংহ ক্ষতিপূরণার্থ ইংরেজ সরকার হইতে বাৎসরিক ৬,০০০ টাকা প্ৰাপ্ত হইতে থাকেন। ১৮৩৪ খৃঃ অব্দে মণিপুর রাজ্যের আয়তন বদ্ধিত হইয়া ৭,০০০ বর্গ মাইলে পরিণত হইয়াছিল। ঐ সালে রাজা গম্ভীরসিংহ পরলোক-গমন করেন। তাহার এক বৎসর বয়স্ক পুত্ৰ চন্দ্ৰকীৰ্ত্তিকে সিংহাসনে অভিষিক্ত করিয়া সেনাপতি নরসিংহ রাজত্ব করিতে থাকেন । চন্দ্ৰকীৰ্ত্তির জননী নবীনসিংহ নামক এক দুষ্ট ব্যক্তিরা প্ৰবৰ্ত্তনায় *** **" নরসিংহের প্রভুত্ব বিলোপ করিবার জন্য তাহাকে হত্যা করিবার ་་་་་་་་་་་་་་་་་་་་ সিংহের চেষ্টা ষড়যন্ত্র করেন। নরসিংহ যখন দেবমন্দিরে পূজায় নিরত ছিলেন, তখন নবীনসিংহ তাহাব উপর অতর্কিতভাবে খড়গাঘাত করে ( ১৮৪২ খৃঃ) । নরসিংহ হস্তে আঘাত পান, কিন্তু তাহার জীবন রক্ষা পায়। নরসিংহ রাণীর কীৰ্ত্তি শ্ৰবণ করিয়া স্বয়ং সিংহাসন অধিকার করেন এবং নবীনসিংহকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ৬ বৎসর কাল রাজা থাকিয়া নরসিংহ ১৭৭২ শকে ( ১৮৫০ খৃঃ) পরলোক-গমন করেন । নরসিংহের কনিষ্ঠ ভ্রাতা দেবেন্দ্ৰসিংহ রাজা হইয়া মাত্র তিন মাস রাজপদে প্ৰতিষ্ঠিত ছিলেন। সপ্তদশ বর্ষীয় বালক চন্দ্ৰকীৰ্ত্তি একদল সৈন্য লইয়া বীর্য-বিক্রমে স্বীয় পৈতৃক সিংহাসন অধিকার করেন। মহারাজ চন্দ্ৰকীৰ্ত্তি ৩৫ বৎসর রাজত্ব করিয়া ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দে স্বৰ্গগত হন, তৎপুত্ৰ সুরচন্দ্ৰ সিংহাসনে অধিরোহণ করেন। এই মণিপুর রাজ্য এখন সম্পূর্ণরূপে বৈষ্ণব ধৰ্ম্মাবলম্বী ; মহাপ্রভুর রাজত্বে র্যাহারা বাস করিতেছেন, তঁহাদের মধ্যে মণিপুরীদের মত ভক্তিমান আর কেহ আছেন। কিনা জানি না। চৈতন্যের জন্মোৎসবে শত শত নরনারী পথের সর্ববিধ কষ্ট সহ কারিয়া নবদ্বীপে আসিয়া সোৎসাহে যোগদান করে, তাহা স্মরণীয়। নবদ্বীপ পল্লী দূর হইতে দেখিয়া ইহারা চৈতন্তের নাম করিয়া উচ্চৈঃস্বরে কঁাদিতে থাকেন, কেহ কেহ বহুদূর হইতে বুকে