পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

YY\9Ne বৃহৎ বঙ্গ রমণী ৬০ লক্ষের উপর টাকা দান করিয়াছিলেন । কিন্তু কাশীমবাজার গদির তৎপরবত্তী উত্তরাধিকাৰী মহারাজ মণীন্দ্ৰচন্দ্রের দানের যশ যেন তঁহাকেও ছাপাইয়া গিয়াছে। মহারাজ বাহাদুরের মৃত্যুতে বঙ্গদেশের সর্ববিষয়ে প্রার্থীরা যেন একমাত্ৰ লক্ষ্যহার হইয়াছে। তদীয় পুত্ৰ মহারাজ শ্ৰীশচন্দ্ৰ নন্দী তরুণ বয়সে রাজ-পদে অধিষ্ঠিত হইয়া বিদ্বজ্জন-সমাজে প্ৰতিপত্তি লাভের জন্য চেষ্টিত আছেন ! দীন-যাপতিৰক্ষা-দযাবাম রায় এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ইনি পুটিয়ার রাজার কৰ্ম্মচারী ছিলেন। ইনি রণনীতি-কুশল ছিলেন, ইহার বুদ্ধি-বলে মুসিঁদকুলী খাঁ বহু রাজনৈতিক ব্যাপারে কৃতকাৰ্য্য হইয়াছিলেন । ইহারই চেষ্টায় বিদ্রোহী সীতারাম রায় বন্দী হইয়া নিহত হন। দয়ারাম রায়ের পুত্ৰ জগন্নাথ রায় এবং তৎপরে ক্রমান্বয়ে-প্ৰাণনাথ রায়, প্ৰসন্ননাথ রায় এবং প্রমথনাথ রায় রাজা হন । ১৮৭৭ খৃঃ অব্দের দিল্লীর দরবারে প্রমথনাথ ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধি প্ৰাপ্ত হন। এখন তৎপুত্ৰ প্ৰমদানাথ রায় রাজপদে অধিষ্ঠিত আছেন। রাজা প্ৰমথনাথের ভ্রাতারা সকলেই কৃতী । বিদ্বান এবং গম্ভীর-প্রকৃতি বসন্তকুমার পরলোকগত হইয়াছেন, শরৎকুমারেব মত দেশহিতৈষী ও অনাড়ম্বর দাতা বঙ্গদেশে আর দ্বিতীয় নাই বলিলেও অত্যুক্তি হইবে না। হেমেন্দ্ৰকুমার সৌজন্যের একটি জীবন্ত বিগ্ৰহ-স্বরূপ । দিনাজপুৱ—কথিত আছে দীনারাজ ঘোষ নামক এক কায়স্থ উত্তর-বাঙ্গলায় রাজা গণেশের উচ্চ কৰ্ম্মচারী হইয়াছিলেন ; এসম্বন্ধে যে প্ৰবাদ আছে তাহা আমি এখানে উল্লেখ করা দবকার মনে করি না ; সুরেন্দ্রমোহন বসু প্ৰণীত ‘ভারত-গৌরবো’র ৪৯০ পৃষ্ঠায় ও দুর্গাচরণ সান্যাল প্ৰণীত ‘বঙ্গের সামাজিক ইতিহাসে’ তাহা লিখিত আছে। দীনারাজ ঘোষের পুত্ৰ শুকদেব রায়ের সময় এই বংশের জমিদারী বৃদ্ধি পায় । ইনি ১৬৭৭ খৃঃ অব্দে লোকান্তবিত হন । তারপরে ক্রমান্বয়ে জয়দেয রায়, প্ৰাণনাথ রায়, রমানাথ রায়, বৈদ্যনাথ রায়, রাধানাথ রায়, গোবিন্দনাথ রায়, তারকনাথ রায় ও গিরিজানাথ রায়--ইনি ১৮৮৮ খৃ: অব্দে ‘মহারাজা” উপাধি প্ৰাপ্ত হন। ইনি দিনাজপুরে একটা খাল কাটিতে ৭৫,০০০ টাকা ব্যয় করেন এবং ভিক্টোরিয়া মেযোরিয়াল হলের জন্য ২৫ হাজার টাকা দিয়াছিলেন । ভোকার নবাব বহু শ—আব্দুল হাকীম নামক এক বিখ্যাত ব্যবসায়ী এই বংশের আদিপুরুষ-তৎপরে যথাক্রমে হাফিজুল্লা, খোজা আলিমুল্লা এবং আবদুল গনি এই সম্পত্তি উত্তরাধিকার-সুত্ৰে প্ৰাপ্ত হন। আবদুল গনিই এই বংশের সর্বাপেক্ষা প্ৰসিদ্ধ ব্যক্তি। ১৮৭১ খৃঃ অব্দে ইনি সি. এস. আই. উপাধি এবং সেই বৎসরেই বংশানুক্ৰমে নবাব উপাধি পাইবার অধিকার পাইয়াছিলেন। নবাব বাহাদুর জীবনে প্ৰায় ৫০ লক্ষ টাকা সাধারণের হিতাৰ্থে বায় করিয়াছিলেন। ১৮৮৮ খৃষ্টাব্দে তিনি কে. সি. এস. আই. উপাধি লাভ করিয়াছিলেন এবং ১৮৯৬ খৃষ্টাব্দে তাহার মৃত্যু হইয়াছিল। ইহা ছাড়া ছোট-বড় অনেক রাজা-মহারাজা ও জমিদার খাস বাঙ্গলায় আছেন, তাহাদের উল্লেখের স্থান আমাদের নাই। ইহাদের মধ্যে চাঁচড়া, নলডাঙ্গা, মহিষাদল, হেতমপুর,