পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠান রাজত্বসম্বন্ধে নানা কথা VINN) একটি চড়ুই পাখীও মারেন নাই, সেই স্মরণীয় দিবসে তিনিও স্বহস্তে ১৫টি হিন্দু বন্দীর শির কৰ্ত্তন করিয়াছিলেন (তাইমুরের আত্মবিবরণী)। ভননেয়াবার আকবরের জীবনচরিতে উল্লেখিত আছে, যখন মুসলমান রাজকৰ্ম্মচারী হিন্দু প্ৰজার নিকট কর আদায় করিতে যাইতেন তখন সেই কাফেরকে হঠা করিতে হইত, কারণ বাজকৰ্ম্মচারীট যেন তাহার মুখে থুতু নিক্ষেপ করিতে পারেন, এই ছিল আইন ; ইহার উদ্দেশ্য “ইসলাম ধৰ্ম্মের গৌরব বৃদ্ধি এবং আশিত কাফেরগণের বশ্যতার পৰীক্ষা করা ।” দিল্লীর বাদসহগণেব যে কতরূপ খামখেয়ালী ছিল তাহার অবধি নাই। একজন ( সেকেন্দর লোডি-১৪৮৮-১৫১৮ খৃঃ) তাহার আমির বা অতিথিদিগকে কি কি দ্রব্য খাইতে দিতেন, তাহার ফর্দ নিজে করিযী। দিতেন, একবাব যাহা করিলেন তাহা যেন পাথরের দাগ হইত—“হাকিম নড়ে, তো হুকুম নড়ে না।” গ্ৰীষ্মকালে জোয়ানপুব হইতে এক সন্ত্রান্ত অতিথি তঁাহার সঙ্গে দেখা করিতে দিল্লীতে উপস্থিত হইলেন । সে সময়টা আতি দারুণ গ্রীষ্ম এবং লোকজন সারাদিন তৃষ্ণায় ছটফট করিতেছিল। সুলতান সেই অতিথির সমস্ত খাদ্যের ব্যবস্থা ও বরাদ্দ করিয়া শেষে র্তাহার জন্য ছয় জালা সরবৎ মঞ্জুর করিলেন। তারপব সেই অতিথি শীতকালে আবার আসিলেন, তখনও দেখিলেন। তঁহার জন্য সেই ছয জালা সরবতের ব্যবস্থা বহিয়া গিয়াছে { তারিকই দাউদি ) । দিল্লীশ্বরগণের এই খামখেয়ালী ও অত্যাচাবের হাওয়াটা বাঙ্গলাযও আসিয়া পৌছিয়াছিল। বিশেষতঃ পাঠান জাতিব স্বভাবতঃই নিৰ্ম্মম ছিলেন। আমাদের কোন ইতিহাস নাই, সুতরাং সেই সময়ের অত্যাচার-কাহিনী লিপিবদ্ধ হয় নাই। তবে আমাদের প্রাচীন সাহিত্য পাঠ কবিলে মাঝে মাঝে এই অভিশপ্ত দেশের অবস্থার কিছু কিছু আভাস পাওয়া যায় । যাহারা ঐতিহাসিক বিষয় লইয’ পুস্তক লিখিতেন, তাহারও স্পষ্ট কবিয়া এসকল কথা লিখিতে সাহসী হইতেন না। প্ৰবল শাসনকৰ্ত্তাদের অত্যাচাবেব কথা সেই দেশের লোকেরা লিখিতে স্বভাবতঃই ভয় পাইয়া থাকে। ভয় পাইযই বোধ হয় বৈষ্ণবগণ আইন করিলেন, কোন নিতান্ত কষ্টকর কথা লিখিতে নাই । বঙ্গদেশে পাঠান রাজত্বের শেষকাল ও মোগলদের আবির্ভাব-এই সময়টায় প্ৰজারা কাজীদের হাতে অত্যন্ত বিড়ম্বিত হইত। এই সমযের অবস্থা সম্বন্ধে কবি চন্দ্রাবতী যথাযথ চিত্ৰ দিয়াছেন “টাকা পয়সা বাখে লোকে মাটিতে পুতিয়া । ডাকাত কাড়িয়া লয় গামছা মোড়া দিয়া ৷ virts (f(43 stS fort at f( উজাড় হইল রাজ্য কাজীর শাসনে ৷ দোছক পাইয়া সবে ছাড়ে লোকালয়। ধনে প্ৰাণে মরে লোক চন্দ্রাবতী কয় ৷”