পাতা:বেগম-মহল - বিনোদবিহারী শীল.pdf/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-লিয়া যায়, মহম্মদজান নিরুদ্দেশ হয় ;- সেইজন্য তাঁহাদের অনুপমৃতে তাহাকে ঘনকান্নার কাজ রন্ধনাদি করিতে হয়, ইহাতে সে পী ব্যতীত দুঃখিত নহে। পড়িয়া পড়িয়া সারে গামা . ভাজিয়া ঈজিয়া প্রকৃতই সে বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছিল । কিন্তু সে যেমন কতকটা লেখা পড়ার হস্ত হইতে রক্ষা পাইল, তেমনই আর এক বিপদে পড়িল । মহম্মদজান তাহার বিদ্যা চাহাকে শিখাইতে আরম্ভ করিল।-সে যে চমৎকার হরবোলা তাঙ্গা লুলিয়া জানিত না,— বহুরূপী সাজিতেও তাহার সমকক্ষ ভারতপূর্ষে আর কেহ ছিল না । সে এখন তাহার দুই বিদ্যা লুলিয়াকে শিখাইতে আরম্ভ করিল ! প্রথম প্রথম একটু ভাল লাগে নাই বািট, কিন্তু পরে সে ইহাতে প্রচুর আনন্দ লাভ করিতে লাগিল। সত্য কথা বলিতে কি, যেমন দিন দিন সে যৌবনোমুখী হইতেছিল, ততই তাহার প্রাণ যেন কি এক শূন্যভাব উপলব্ধি করিতেছিল। প্রাণ যেন কি চায়, – কিন্তু কি চায়, তাহা সে জানে না। ;- সুতরাং ত্যাহার সুখের সরল প্ৰাণে কোথা হইতে ধীরে ধীরে এক কাল মেঘ উদিত হইতেছিল । তাহাই তাহার • আর গান বাজনা লেখা পড়া, কবিতা রচনা, ভাল লাগিতেছিল না,- এই জন্যই মহম্মদজানের হরবোলার বুলি ও বহুরূপীর ছদ্মবেশ তাহার বড়ই ভাল লাগিতে লাগিল। সে কখনও বুড়ি সাজিত, কখনও পুরুষ সাজিত, কখন বা বাঘ সাজিয়া গৰ্জ্জন করিত ! সে পাখীর শিশ হইতে ক্ৰমে ক্রমে অনেক বুলি শিখিয়াছিল। আপন মনে বিড়াল ডাকিয়া কুকুর ডাকিয়া বড়ই আনন্দ উপলব্ধি করিত,--তবুও তাহার প্রাণ শূন্য খৃষ্ঠ বোধ হইত। তবুও যেন প্ৰাণে কি নাই, - তবুও যেন প্ৰাণ , কি চায়,- এই সময়ে চাঁদের আলোর ন্যায় বিমল সিংহ উদিত ইয়া তাহার প্রাণে এক নূতন আলোকের সৃষ্টি করিল।