পাতা:বেদান্তগ্রন্থ - রামমোহন রায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@g (e) বেদের সার, অর্থাৎ সেই সেই বেদের সমগ্ৰ তাৎপৰ্য প্ৰকাশ করে। সেই বাক্যগুলি এই :- ঋগ্বেদ-প্ৰজ্ঞানং ব্ৰহ্ম-অহং প্ৰত্যয়ের দ্বারা যাহাকে উপলব্ধি করা যায়, সেই জ্ঞানই ব্ৰহ্ম । যজুঃ-অহং ব্ৰহ্মাস্মি—অহংবোধের দ্বারা যার উপলব্ধি হয়, সে ব্ৰহ্মই। সাম—তৎ ত্বম অসি—তৎ শব্দের দ্বারা যাহাকে বুঝা যায়, সেই তৎ ব্ৰহ্ম। অথর্ব-অয়মাত্মা ব্ৰহ্মা-এই প্ৰত্যক্ষ উপলভ্যমান আত্মা ব্ৰহ্মই। সুতরাং জীবাত্মা ব্ৰহ্মই, ইহাই সকল বেদের সিদ্ধান্ত ॥ দশোপনিষদ এই জ্ঞানেরই প্ৰকাশ, সুতরাং উপনিষদও বেদান্ত । কিন্তু উপনিষদের কোন কর্তা নাই, তাহ প্ৰকাশিত হইয়াছিল নিজে, বুদ্ধিমান মনুষ্য কর্তৃক রচিত নহে, এই হেতু উপনিষদ এক সুবিন্যস্ত চিন্তাধারা নহে। বিশাল বুদ্ধি বেদব্যাস তাই উপনিষদের উপদিষ্ট বিষয়সকল সুবিন্যস্ত করিয়া সুত্রাকারে নিবদ্ধ করেন ; সেই সুত্ৰসকলের নাম ব্ৰহ্মসূত্র । বিভিন্নকালে বিভিন্ন আচাৰ্য এই সুত্ৰসকল নিজ নিজ উপলব্ধি অনুসারে ব্যাখ্যা করিয়া বিভিন্ন মতবাদ ও সাধনার প্রবর্তন করেন । আচাৰ্যদের মধ্যে ভগবান শঙ্করই সর্বপ্রথম দশ উপনিষদের এবং ব্ৰহ্মসূত্রের ভাষ্য রচনা করেন ; ব্ৰহ্মসূত্রের অনুপম শঙ্করভাষ্যই বেদান্তদর্শন নামে খ্যাত । রামমোহনও ব্ৰহ্মসূত্রের ব্যাখ্যা করেন বাঙ্গালা দেশের লোকের জন্য বাঙ্গালা ভাষায় ; নিজের ব্যাখ্যা শঙ্করের ব্যাখ্যা হইতে পৃথক সম্ভবতঃ এই কথা বুঝাইবার জন্যই তিনি নিজ গ্রন্থের নাম করেন। “বেদান্তগ্ৰস্থা” । রামমোহন ] ইংরাজী ভাষাতে উপনিষদ ও ধোদান্তসার ও প্রচার করিয়াছিলেন । হিন্দি ভাষাতেও বেদান্তগ্ৰন্থ প্ৰচারিত হইয়াছিল। Tfaqar V3 Giqwfv আজিকার দিনে উপনিষদ ও ব্রহ্মসূত্ৰভাষ্য ভারতের সকল প্ৰাদেশিক ভাষাতে অনুদিত হইয়া প্ৰকাশিত হইয়াছে এবং হইতেছে। কিন্তু রামমোহনের কালে তাহা ছিল না । উপনিষদের ও বেদান্তের প্রচারের একটা ইতিহাস আছে । যাহারা সন্ন্যাস গ্ৰহণ করিতেন, তাহারা গুরুর নিকট উপনিষদের উপদেশ শুনিয়া মনন ও সাধনা করিতেন, ইহাই ছিল একমাত্র উপায়। উপনিষদ বেদান্তের শ্রুতিপ্ৰস্থান, ব্ৰহ্মসূত্র তার ন্যায়প্ৰস্থান এবং গীতা প্ৰভৃতি স্মৃতিপ্ৰস্থান । এই প্ৰস্থানত্রয়ের নামও বেদান্তই ছিল ।