পাতা:বেদান্তগ্রন্থ - রামমোহন রায়.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S) 07 বেদান্তগ্ৰন্থ নিরবিয়ব, যাহা নিরবয়ব, তার উৎপত্তি নাই ; যার উৎপত্তি নাই, তার বিনাশও নাই ; সুতরাং পরমাণু নিত্য। পরমাণু প্ৰত্যক্ষ নহে, কিন্তু অনুমেয় ; সেই অনুমান এই প্ৰকার ; সাবয়ব দ্রব্যের অবয়বধারার বা অবয়বপরম্পরার নিশ্চয়ই বিশ্রাম আছে ; ঘটের অবয়ববিভাগ করিতে গেলে, ক্ৰমে সুন্ম অবয়বে উপনীত হইতে হয় ; এইরূপে সূক্ষ্ম, সূক্ষ্মতর, সূক্ষ্মতম অবয়বে উপনীত হইবার পর ঈদৃশ অবয়ব উপস্থিত হয় যার বিভাগ করা অসম্ভব ; যার বিভাগ হইতে পারে না, যাহা অভেদ্য, তাহাই পরমসূক্ষ্ম, তাহাই পরমাণু। দুইটি পরমাণুর সংযোগে দ্বাণুক উৎপন্ন হয় ; অন্বন্তর সংযোগাৎ দ্বাণুমারভ্যতে —আনন্দগিরি। তিনটি দ্বাণুকের সংযোগে ত্ৰাণুক ইত্যাদিক্ৰমে মহাবয়বী বা অন্ত্যাবয়বী উৎপন্ন হয়। বৈশেষিকমতে পরিমাণ চারিপ্ৰকার-অণু, মহৎ, হ্রষ, দীর্ঘ ; প্ৰত্যেক বস্তুতে দ্বিবিধ পরিমাণ আছে ; যাহাতে অণুত্বপরিমাণ আছে, তাহাতে হ্রস্বপরিমাণও আছে ; এইরূপে মহত্ত্ব ও দীর্ঘত্ব সমদেশবর্তী। মহত্ত্বই প্ৰত্যক্ষের কারণ।” ( স্বৰ্গত মঃ মিঃ চন্দ্ৰকান্ত তর্কালঙ্কার ) বৈশেষিকমতে চেতন ব্ৰহ্ম অচেতন জগতের কারণ হইতে পারে না । কারণ প্ৰত্যেক কারণ দ্রব্যের গুণ কাৰ্যদ্রব্যে নিজের সদৃশ গুণ জন্মায়। চেতন ব্ৰহ্ম জগতের কারণ হইলে জগৎও চেতন হইত। কিন্তু জগৎ অচেতন, সুতরাং ব্ৰহ্ম জগতের কারণ নহেন। এই আপত্তির উত্তরে বেদব্যাস ১১নং সূত্র রচনা করিয়াছেন। সুত্রস্থ পরিমণ্ডল শব্দের অর্থ পরমাণু, সুত্রের তাৎপৰ্য এই, চারিটী দ্ব্যগুকের সংযোগে চতুরাণুক জন্মে। দ্বাণুক পরিমাণেঅণুহুষ, ত্ৰসরেণু ও চতুরাণুক পরিমাণে মহদীর্ঘ, দ্বাণুকের শুরুগুণ চতুরণকে জন্মে, ইহা সত্য ; কিন্তু দ্বাণুকের পরিমাণগত অণুহূদ্বতা তো চতুরাণুকে জন্মে না। সুতরাং বৈশেষিকের মতেও কারণবস্তুর বিসদৃশ গুণ কাৰ্যবস্তুতে উৎপন্ন হয়। অতএব চেতন ব্ৰহ্ম হইতে বিসদৃশ গুণযুক্ত অচেতন জগৎ জন্মে, ইহা বৈশেষিকের সিদ্ধান্তের দ্বারাও সমৰ্থিত । যদি কহ দুই পরমাণু নিশ্চল কিন্তু কৰ্মাধীন দুইয়ের যোগের দ্বারা দ্ব্যগুকাদি হয় ঐ দ্ব্যগুকাদিক্ৰমে সৃষ্টি জন্মে, ইহার উত্তর এই ৷ উভয়থাপি ন কৰ্মাহতস্তদদ্ভাবঃ। ২২।১২।। ঐ সংযোগের কারণ যে কর্ম তাহার কোন নিমিত্ত আছে কি না ; তাহাতে নিমিত্ত আছে ইহা কহিতে পারিবে না যেহেতু জীবের যত্ব