পাতা:বেলা অবেলা কালবেলা - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরাতন আলোর আধারে। আমাদের জানা ছিল কিছু ; কিছু ধ্যান ছিল ; আমাদের উৎস-চোখে স্বপ্নছটা প্রতিভার মতো হয়তো-বা এসে পড়েছিল ; আমাদের আশা সাধ প্রেম ছিল ;–নক্ষত্রপথের অন্তঃশুন্যে অন্ধ হিম আছে জেনে নিয়ে তবুও তো ব্রহ্মাণ্ডের অপরূপ অগ্নিশিল্প জাগে ; আমাদেরো গেছিল জাগিয়ে পৃথিবীতে ; আমরা জেগেছি—তবু জাগাতে পারি নি ; আলো ছিল—প্রদীপের বেষ্টনী নেই ; কাজ ছিল—শুরু হল না তো ; তাহলে দিনের সিড়ি কি প্রয়োজনের ? নিস্বত্ব স্বর্যকে নিসে কার তবে লাভ ! সচ্ছল শাণিত নদী, তীরে তার সারস-দম্পতি ঐ জল ক্লাস্তিহীন উৎসানল অনুভব ক'রে ভালোবাসে ; তাদের চোখের রং অনন্ত আকৃতি পায় নীলাভ আকাশে ; দিনের স্বর্যের বর্ণে রাতের নক্ষত্র মিশে যায় ; তবু তারা প্রণয়কে সময়কে চিনেছে কি আজো ? প্রকৃতির সৌন্দর্যকে কে এসে চেনায় ! আমরা মানুষ ঢের কুরুতর অন্ধকূপ থেকে অধিক আয়ত চোখে তবু ঐ অমৃতের বিশ্বকে দেখেছি ; শান্ত হয়ে স্তব্ধ হয়ে উদ্বেলিত হয়ে অনুভব ক’রে গেছি প্রশান্তিই প্রাণরণনের সত্য শেষ কথা, তাই - চোখ বুজে নীরবে থেমেছি।