পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ
৯৫

একেই মেঘের জন্য চতুর্দ্দিক্ অন্ধকার ছিল। ঘন বৃক্ষপত্র সে অন্ধকারকে আরও বাড়াইয়া তুলিয়াছিল। কিছুক্ষণ যাইতে না যাইতেই জো বেশ দেখিল যে, কয়েকজন কাফ্রি গাছে উঠিতেছে। জো কেনেডির বাহু টিপিয়া সঙ্কেত করিল। তখন কাফ্রিদিগের মৃদু কণ্ঠধ্বনি শুনা যাইতেছিল। জো বন্দুক তুলিয়া সন্ধান করিল।

 কেনেডি কহিলেন—“থাম।”

 কতকগুলি কাফ্রি সত্যই বৃক্ষারোহণ করিতেছিল। ধীরে—অতি ধীরে—ঠিক যেন সরিসৃপের ন্যায় তাহারা উঠিতেছিল। অল্পক্ষণ মধ্যেই অন্ধকার ভেদ করিয়া দুইটী মনুষ্যমূর্ত্তি দেখা দিল। জো বৃক্ষের সেইদিকে বসিয়াছিল।

 কেনেডি হাকিলেন—“মার!”

 উভয়ের বন্দুক বজ্রের ন্যায় একসঙ্গে ধ্বনিয়া উঠিল। আহত কাফ্রিদিগের আর্ত্তনাদের সহিত মিশিয়া সেই ধ্বনি কাঁপিতে কাঁপিতে আকাশে মিলাইয়া গেল। অন্যান্য কাফ্রিগণ হুঙ্কার করিয়া উঠিল এবং বোধ হইল যেন পলায়ন করিল। কিন্তু সেই হুঙ্কার ও আর্ত্তনাদের মধ্যে জো এবং কেনেডির কর্ণে এ কার কণ্ঠ বাজিল? তাঁহাদের সন্দেহ হইল, বুঝি শুনিতে ভ্রম হইয়াছে! নতুবা ইহাও কি সম্ভব? আফ্রিকার মহারণ্যে—এই নরখাদক অসভ্যদিগের মধ্যে— সুসভ্য ফরাসীর কণ্ঠ! ইহাও কি সম্ভব? না-ভ্রম নয়! ওই যে আবার সেই ঘোরতর আর্ত্তনাদ শ্রুত হইল—“রক্ষা কর-রক্ষা কর!”