দেখিতে পাইলেন না। বোধ হইতে লাগিল, বৃক্ষ লতা প্রভৃতি ক্রমেই যেন বিরল হইতেছে। মধ্যে মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্ব্বত দৈত্যের ন্যায় দণ্ডায়মান রহিয়াছে। ক্বচিৎ দুই চারিটী বিশুষ্ক তরু বা কণ্টকময় গুল্ম মাত্র দেখা যাইতে লাগিল। ফার্গুসন্ ক্রমেই চিন্তিত হইয়া পড়িলেন। দিন শেষে হিসাব করিয়া দেখিলেন, স্বর্ণক্ষেত্র হইতে মাত্র ৩০ মাইল পথ আসিয়াছেন, অথচ জল ফুরাইয়া ১৫ সেরে দাঁড়াইয়াছে। ফার্গুসন্ পাঁচ সের জল ভবিষ্যতের জন্য সাবধানে সরাইয়া রাখিলেন। কলের জন্য দশ সের থাকিল। দশ সের জলে ৪০০ ঘন ফুট গ্যাস হয়। প্রতি ঘণ্টায় ভিক্টোরিয়ার ৯ ঘন ফুট গ্যাসের প্রয়োজন। তিনি সঙ্গীদিগকে কহিলেন—
“আর আমরা ৪৪ ঘণ্টা মাত্র যেতে পারি। রাত্রে যাওয়া হ’বে না। কোথায় যে খাল বিল নদী বা ঝরণা আছে, রাত্রে গেলে কিছুই দেখা যাবে না। জল চাই-ই চাই। এখন খুব কম জল খেয়ে কাটাতে হবে।”
কেনেডি কহিলেন, “তার জন্য ভাবনা কি। খুব কমই খাওয়া যাবে। এখনো ত প্রায় তিন দিন যেতে পারবো। এর মধ্যে কি আর জলই মিলবে না।”
রাত্রি নির্বিঘ্নে কাটিল। উজ্জ্বল নক্ষত্রখচিত অতি সুন্দর রজনী। ফার্গুসন্ চাহিয়া চাহিয়া সেই নক্ষত্ররাশি দেখিলেন। আকাশের অবস্থা দেখিয়া বুঝিলেন, বাতাসের বেগ বর্দ্ধিত হইবে না। তিনি বিচলিত হইলেন।