পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোড়শ পরিচ্ছেদ
১১৯

অপেক্ষাকৃত সমতল ক্ষেত্র দেখা দিল। কদাচিৎ দুই একটী অর্দ্ধশুষ্ক লতা বা রসহীন বৃক্ষ নয়নপথে পতিত হইতে লাগিল। ফার্গুসন্ বলিলেন—“আফ্রিকার নগ্ন মূর্ত্তি দেখ। আমি তোমাদের কাছে এই আফ্রিকার কথাই বলেছি।”

 “এ আর বেশী কি! উত্তাপ আর বালু—এ ত হ’বেই! যেখানে যেমন, সেখানে তেমন। এতদিন বন-জঙ্গল মাঠ-ঘাট শস্যক্ষেত্র এই সব দেখে মনে হচ্ছিল বুঝি ইংলণ্ডেই আছি। এতক্ষণে মনে হচ্ছে যে, আমরা আফ্রিকায় এসেছি।”

 সমস্ত দিবস অগ্নি বৃষ্টি করিয়া সূর্য অস্ত গেল। ফার্গুসন্ দেখিলেন তাঁহারা কুড়ি মাইলের অধিক আসিতে পারেন নাই।

 পরদিন আবার তপন উদিত হইল, আবার পূর্ববৎ অনলবৃষ্টি হইতে লাগিল। বাতাস পূর্ববৎই মন্দ বহিল। ফার্গুসন্ দূরবীক্ষণ লইয়া দেখিলেন সম্মুখে অনন্ত বিস্তৃত মরুভূমি! তপন কিরণে সমুজ্জ্বল ধূ ধূ বালুকারাশি জ্বলিতেছিল।

 তিনি একেবারে হতাশ হইলেন। ভাবিতে লাগিলেন, ‘কেনই বা কেনেডিকে আনিলাম, কেনই বা জোকে আসিতে দিলাম! আমিই এদের প্রাণনাশের কারণ হয়েছি!’ কখনো ভাবিলেন, ‘কেন এদেশে আসিলাম। যা’ কখনো সম্ভব নয়, কেনই বা তাই করতে প্রবৃত্ত হলেম! এখনো সময় আছে —ফিরে যাই। ফিরতে কি পারবো না? উপরে উঠলে বুঝি বেগশালী বায়ু-প্রবাহ পেতে পারি। কি করি? উপরে উঠবো জল যে ফুরিয়েছে——’