ফার্গুসনের চিত্ত এত অস্থির হইয়াছিল যে, তিনি মনের ভাব গোপন করিতে পারিলেন না। সঙ্গীদিগকে সকল অবস্থা জানাইলেন। জো কহিল, “ভৃত্য আমি। প্রভুর যা’ ইচ্ছা, আমারও তাই।”
“কেনেডি, তোমার মত কি?”
“ফার্গুসন্, তুমি ত জান হতাশ হ’বার লোক আমি নই। আমাদের যাত্রাপথ যে নিতান্ত বিপদসঙ্কুল তা’ আমি জানতেম। কিন্তু যখন দেখলেম যে, তুমি একা সেই বিপদের মধ্যে মাথা দিয়েছ, অমনি বিপদ্ তুচ্ছ জ্ঞান করে’ আমি তোমার সহযোগী হয়েছি। আমি ছায়ার মত তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবো। ধৈর্য্য ধর। এখন ফিরে যেতে হ'লেও আবার হয় ত এই সব বিপদেই পড়বো। আমি বলি চালাও—যা’ থাকে কপালে—চালাও।”
“বন্ধুগণ, ধন্যবাদ! তোমরা যে আমাকে এত বিশ্বাস কর, তা’ আমি জানি।”
তিন জনে তখন করমর্দ্দন করিলেন। ফার্গুসন্ বলিলেন— “শোন বলি। গিনি উপসাগর থেকে আমরা বোধ হয় তিনশ’ মাইলের অধিক দূরে নাই। সুতরাং এই যে মরুভূমি, এটা খুব বড় নয়। উপসাগরের তীরে অনেক দূর পর্য্যন্ত মনুষ্যের বসতি আছে বলে’ জানা গেছে। যদি দরকার হয়, আমরা সেই দিকে যাব। সে দিকেও কি একটু জল মিলবে না! কিন্তু ভাই, এখন বাতাসও যে নাই! বাতাসের অভাবেই যে বেলুন চলছে না।”