পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোড়শ পরিচ্ছেদ
১২১

 “যদি না চলে, বাতাসের জন্য অপেক্ষা করাই মঙ্গল। যখন পাব তখন যাব।”

 তাহাই হইল। নির্বিঘ্নে নিস্তব্ধ রজনী কাটিয়া গেল। প্রভাতে ফার্গুসন্ দেখিলেন, তিন সের মাত্র জল আছে। তখন নির্মেঘ আকাশে মরুসূর্য্য তক্ তক্ করিতেছিল। ভিক্টোরিয়া ৫০০ ফিট উঠিল। কিন্তু নীচেও যেমন উপরেও তেমন—বাতাস ছিল না। ফার্গুসন্ একটি দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন—

 “আমরা এখন মরুভূমির ঠিক মধ্যে। দেখ, বালুকারাশির কি বিপুল বিস্তার! কি বিস্ময়কর দৃশ্য চোখের সামনে ভাসছে, দেখ। প্রকৃতির কি আশ্চর্য্য লীলা! কে এর রহস্য ভেদ করতে পারে! আফ্রিকার এক দিকে কত নিবিড় বন, সরস প্রান্তর, বিপুলা তরঙ্গিণী, বিশাল হ্রদ—আর এদিকে যোজনের পর যোজন বিস্তৃত উত্তপ্ত বালুকারাশি! বৃক্ষ নাই, লতা নাই, গুল্ম নাই—সামান্য আশ্রয় পর্যন্ত নাই! শীতল বারির পরিবর্ত্তে এখানে জ্বালাময় অগ্নি ছুটছে। কেন এমন হয়েছে বলতে পার, কেনেডি?”

 “না ভাই, ও সব কেনর আমি ধার ধারি না। তবে অবস্থাটা যে, ওই রকমই’ তার জন্যই চিন্তা হয়েছে। দেখছ না, বেলুন ত দাঁড়িয়ে গেল!”

 এমন সময় জো বলিয়া উঠিল—“আমার যেন বোধ হচ্ছে, পূর্বের দিকে একটু মেঘ দেখা দিয়েছে।”