পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ

আরো কতকগুলি কঙ্কাল বিক্ষিপ্ত রহিয়াছে। কঙ্কালের সারি দেখিয়া ফার্গুসন্ মুহূর্ত্তে বুঝিলেন যে, পর্য্যটকগণ এই পথে আসিতে আসিতে দূরে কূপ দেখিয়া জলের আশায় শুষ্ক কণ্ঠে উহার দিকে ছুটিয়াছিল। যাহারা দুর্ব্বল তাহারা কূপ পর্য্যন্ত পৌঁছিতেও পারে নাই—পথিমধ্যেই পড়িয়া মরিয়াছে! সবল যাহারা তাহারা কূপের নিকট যাইয়াই মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছে। তিন বন্ধু এই দৃশ্য দেখিয়া পরস্পর পরস্পরের মুখের দিকে চাহিলেন। কেনেডি বলিলেন—

 “আর জলে কাজ নাই ফার্গুসন্, চল পালাই। এ দৃশ্য আর দেখা যায় না।”

 “না ডিক্, পালালে হ’বে না। জল আছে কি না দেখতেই হ’বে। কূপের তল পর্য্যন্ত পরীক্ষা না করে’ যাওয়া হ’বে না।”

 জো এবং কেনেডি বেলুন হইতে অবতরণ করিয়া এক দৌড়ে কূপের নিকটবর্ত্তী হইলেন। কূপের তলদেশেও বিন্দু মাত্র বারি ছিল না। তাঁহারা বালু সরাইতে লাগিলেন, কিন্তু জল মিলিল না। দারুণ শ্রমে ক্লান্ত হইয়াও তাঁহারা খনন করিতে বিরত হইলেন না। প্রবল বেগে স্বেদ ঝরিতে লাগিল—শরীর অবসন্ন হইয়া আসিল—চক্ষু অন্ধকার হইল—মস্তক ঘুরিতে লাগিল—জল মিলিল না।