পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তদশ পরিচ্ছেদ
১২৯

কলে উত্তাপ দিতে লাগিলেন। বেলুন উপরে উঠিল— আরো উপরে—আরো উপরে। কোথাও বাতাস ছিল না। কোথাও বায়ুপ্রবাহ মিলিল না! ফার্গুসন্ ৫ মাইল পর্য্যন্ত উপরে উঠিয়াও বেগশালী বায়ুপ্রবাহের সন্ধান পাইলেন না।

 জল ফুরাইল! মরুভূমে শেষ সম্বল এক সের জল— তাহাও ফুরাইল! গ্যাসের অভাবে কলের অগ্নি নির্বাপিত হইল। বৈদ্যুতিক যন্ত্র আর চলিল না। ভিক্টোরিয়া ধীরে ধীরে নামিয়া পড়িতে লাগিল। অবশেষে যে স্থান হইতে উঠিয়াছিল, ঠিক সেই স্থানেই আসিয়া বালুরাশি স্পর্শ করিল।

 তখন মধ্যাহ্ন। ফার্গুসন্ হিসাব করিয়া দেখিলেন, চ্যাড-হ্রদ তথা হইতে ৫০০ মাইলের কম নহে। আফ্রিকার পশ্চিম তীরও তখন প্রায় ৪০০ মাইল ছিল। বেলুন ভূমি স্পর্শ করিবামাত্র জো এবং কেনেডির মোহ ভঙ্গ হইল। কেনেডি জিজ্ঞাসা করিলেন—“আমরা কি এখানেই থাকবো?”

 “না থেকে আর উপায় কি। কলের সব জলটুকু শেষ হয়েছে”

 তিন জনে বেলুন হইতে অবতরণ করিয়া আপন আপন ওজনের সমান বালুকা তুলিয়া বেলুন মধ্যে রাখিলেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাইতে লাগিল। কেহ কাহারও সহিত বাক্যালাপ করিলেন না। রাত্রে জো মাখন এবং বিস্কুট বাহির করিল। কেহ আহার করিলেন না। মাত্র এক গণ্ডুষ করিয়া উষ্ণ বারি পান করিয়া নৈশ ভোজন শেষ করিলেন!