পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ

 সমস্ত রজনী কাহারো নিদ্রা হইল না। এতই গরম বোধ হইতেছিল যে, এক একবার নিশ্বাস রুদ্ধ হইয়া আসিতেছিল পরদিন প্রভাতে দেখা গেল পান করিবার জন্য আর অর্দ্ধ সের মাত্র জল আছে। ফার্গুসন্ উহা একপার্শ্বে সরাইয়া রাখিলেন তিন জনেই স্থির করিলেন যে, শেষ সময় ভিন্ন উহা পান করিবেন না।

 অল্পক্ষণ পরেই জো কহিল, “বাপরে! ১২০ ডিগ্রী উত্তাপ! আমার দম বন্ধ হচ্ছে। গা জ্বলে’ যাচ্ছে।”

 কেনেডি বলিলেন, “বালু এত তেতেছে, যেন আগুনে ভাজা! আকাশে বিন্দুমাত্রও মেঘ নাই। এমন অবস্থায় পড়লে মানুষ মূহূর্ত্তে পাগল হয়।”

 বন্ধুদিগকে সাহস দিয়া ডাক্তার কহিলেন—“হতাশ হ’য়ো না। মরুভূমে খুব বেশী গরম হ’লে তার পর নিশ্চয়ই ঝড় বৃষ্টি হয়।”

 “তার ত কোন লক্ষণ দেখি না, ফার্গুসন্।”

 “এখন তেমন কিছু নাই বটে, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে বায়ুমান যন্ত্রের পারা যেন নিম্নগামী হ’বার মত হয়েছে।”

 “ও তোমার ভ্রম, ফার্গুসন্।”

 “না ডিক্। সাহস কর। ধৈর্য্য ধর।”

 কেনেডি যতই সেই মেঘশূন্য পরিচ্ছন্ন উজ্জ্বল আকাশ ও দিগন্তবিস্তারি উত্তপ্ত বালুকারাশির দিকে চাহিতেছিলেন, ততই শঙ্কিত হইতেছিলেন। তাঁহারা ক্রমে বিকারগ্রস্ত হইতে লাগিলেন।