ফেলিতে জো’র বড় কষ্ট হইতেছিল! কিন্তু উপায় ছিল না। ভার না ফেলিলে বেলুনের উঠিবার সম্ভাবনা ছিল না।
যাত্রার আয়োজন করিয়া ফার্গুসন্ বসিয়া রহিলেন। রজনী শেষে প্রবল ঝটিকা দেখা দিল। ঝড়ের মুখে বেলুন ছুটিতে লাগিল। প্রভাতে স্থানে স্থানে বৃক্ষলতাদির অস্তিত্ব সূচিত হইতে লাগিল। কোন কোন স্থানে শরবণ দেখা যাইতে লাগিল। দূরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্ব্বতগাত্রে গুল্মাদি দেখিয়া ফার্গুসন্ কহিলেন—
“আমরা মরুভূমি পার হয়েছি।”
সঙ্গীরা আনন্দে করতালি দিল। ভিক্টোরিয়া তখন একটা ক্ষুদ্র হ্রদের উপর দিয়া যাইতেছিল। হ্রদের তীরে সবলকায় ষণ্ডগুলি ঘন ঘাসের মধ্যে বিচরণ করিতেছিল। ধূসর, কালো এবং কপিশ বর্ণের বৃহদাকার হস্তিগণ দলবদ্ধ হইয়া বৃক্ষাদি ভগ্ন করিয়া ইতস্ততঃ বিচরণ করিতেছিল।
কেনেডি আনন্দে অধীর হইয়া কহিলেন—“দেখ, দেখ, কি সুন্দর হাতী। যদি নামতে পারতেম——এমন শিকার চলে’ যাচ্ছে!”
বেলুন চলিতে লাগিল। পর্ব্বতের কানন-সমাকুল অংশে অগণিত ক্ষুদ্র বৃহৎ জলধারা প্রবাহিত হইয়া হ্রদ মধ্যে পতিত হইতেছিল। হরিৎ, পীত, নীল, লাল, সবুজ, শ্বেত, নানাবর্ণের বিহঙ্গমগণ কলরব করিতে করিতে বৃক্ষ হইতে বৃক্ষান্তরে, শৈল হইতে শৈলান্তরে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়িয়া যাইতেছিল।