পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ
১৪৫

 দ্বাদশ ঘণ্টা অতিবাহিত হইল। ভিক্টোরিয়া তখন একটী নদীবিধৌত জনপদে আসিয়া উপনীত হইয়াছিল। বহু দূরে অলণ্টিকা পর্ব্বতের চূড়া তখন দৃষ্টিগোচর হইতেছিল। ফার্গুসন্ বলিলেন—

 “কোন য়ুরোপীয় এ পর্য্যন্ত ওই পর্ব্বতের উপর যেতে পারে নাই। শুনা যায় অলণ্টিকা পর্ব্বতের গা থেকেই আফ্রিকার পশ্চিমাংশের নদ নদী জন্মলাভ করেছে।”

 বেলুন ক্রমেই সম্মুখে অগ্রসর হইতেছিল। সন্ধ্যার প্রাক্কালে মিনিক্ পর্ব্বতের দুইটি শৃঙ্গ দেখা গেল। ফার্গুসন্ একটি উচ্চ বৃক্ষশিরে বেলুন আবদ্ধ করিলেন। প্রবল ঝড়ে উহা এমন দুলিতে লাগিল যে, মনে হইতে লাগিল তাঁহারা বেলুন হইতে নিশ্চয়ই ভূতলে নিক্ষিপ্ত হইবেন। বেলুনে অবস্থান তখন একান্ত বিপজ্জনক ও কষ্টকর হইয়া উঠিয়াছিল।

 পরদিন পর্য্যন্ত অল্প ঝড় ছিল। বেলুন নিরাপদে চলিতে লাগিল। বায়ুপ্রবাহ বেলুনকে মিনিক্ পর্ব্বতের দিকে লইয়া যাইতেছিল। ফার্গুসন্ কিছুতেই বেলুনের গতি ফিরাইতে পারিলেন না! চ্যাড-হ্রদ এবং নাইগার নদীর মধ্যস্থলে মিনিক্ পর্ব্বত একটি দূরতিক্রম্য প্রাকারের ন্যায় অবস্থিত। অল্পকাল মধ্যেই ভিক্টোরিয়া মিনিক্ শৈলের নিকটবর্ত্তী হইল। ফার্গুসন্ গ্যাসে তাপ দিতে লাগিলেন। বেলুন ৮০০০ ফিট উপরে উঠিল। দারুণ শীত বোধ হইতে লাগিল। তাঁহারা কম্বলে শরীর আচ্ছাদন করিয়া বসিলেন। পর্ব্বত অতিক্রম