পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ

 রজনী দ্বিপ্রহর হইল। অকস্মাৎ তাঁহারা দেখিলেন, সমগ্র কার্ন্যাক্ নগরে একটা বিপুল অগ্নিকাণ্ড উপস্থিত হইয়াছে। চারিদিক্‌ হইতে অসংখ্য অগ্নিমুখ খধূপ ঊর্দ্ধে উঠিতেছে। ভীষণ চিৎকার ও ঘন ঘন বন্দুকের ধ্বনির মধ্যে খধূপগুলি যেন বেলুন লক্ষ্য করিয়াই উপরে উঠিতেছিল।

 অল্পক্ষণ মধ্যেই ফার্গুসন্ বুঝিলেন, যাহা তিনি খধূপ মনে করিয়াছিলেন, তাহা খধূপ নহে—পারাবত। শত সহস্র পারাবতের পুচ্ছে দাহ্য পদার্থ বাঁধিয়া দিয়া কাফ্রিরা বেলুন আক্রমণ করিবার জন্য উড়াইয়া দিয়াছিল। পারাবতগণ বেলুন দেখিয়া ভীত হইয়া তীর্য্যগ্ ভাবে উড়িতেছিল। মনে হইতেছিল, অন্ধকার আকাশ গাত্রে শত সহস্র অগ্নিরেখা তীর্য্যগ্ ভাবে ঘুরিতেছে। পারাবতগুলি ক্রমে বেলুনের চতুদ্দিক্ ঘিরিয়া ধরিল। বেলুন সেই অনল-সমুদ্রে ভাসিতে লাগিল।

 ফার্গুসন্ তন্মুহূর্ত্তেই কিছু ভারা নিক্ষেপ করিয়া অনেক উপরে উঠিয়া গেলেন। পারাবতগুলি প্রায় দুই ঘণ্টা পর্য্যন্ত শূন্যে ভ্রমণ করিয়া শেষে নামিয়া পড়িল।

 ফার্গুসন্ বলিলেন—“এখন আর চিন্তা নাই। এস, ঘুমানো যাক। এদের কৌশলটা বেশ। যুদ্ধের সময় ওরা অমনি করে’ শত্রুর গৃহে অগ্নি সংযোগ করে।”

 নির্বিঘ্নে রজনী প্রভাত হইল। প্রভাতে ফার্গুসন্ বলিলেন—

 “আমাদের কপাল ফিরেছে, ডিক্। আমরা বোধ হয়, আজই আবার চ্যাড হ্রদ দেখতে পাব।”