পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একবিংশ পরিচ্ছেদ
১৬৩

উড়িতে আরম্ভ হইয়াছে। উহা উড়িতে উড়িতে ঘুরিতেছে, ঘুরিয়া ঘুরিয়া উড়িতেছে। সেই উৎক্ষিপ্ত ঘুর্ণ্যমান বায়ুতাড়িত বালুরাশির তরঙ্গমধ্যে তখন একদল পথিকের জীবন্ত সমাধি ঘটিতেছিল! উষ্ট্রগণ যন্ত্রণায় চীৎকার করিতে লাগিল।

 মুহূর্ত্তে সব শেষ হইয়া গেল! উষ্ট্র আরোহী বণিকগণ সমস্তই বালুকা-গর্ভে সমাহিত হইল! কেবল উন্মত্ত পবন তখনো সেই স্থানে সাহারার বালু লইয়া ক্রীড়া করিতে লাগিল—ঘুরাইতে লাগিল—ইতস্ততঃ চালিত করিতে আরম্ভ করিল! যে স্থান সমতল ক্ষেত্র ছিল, তাহা মুহূর্ত্তমধ্যে বালুকার উচ্চ পর্ব্বতে পরিণত হইল। সেই পর্ব্বতের পাদমূলে জীবন্ত মানব জীবন্ত পশু চিরদিনের জন্য সমাহিত হইয়া গেল!

 এই লোমহর্ষণ দৃশ্য দেখিয়া ফার্গুসন ও কেনেডির হৃদয় স্তব্ধ হইল! বেলুন তখন তাঁহাদের আয়ত্তের বাহিরে গিয়াছিল। বিপরীতগামী বায়ুরাশি কর্ত্তৃক প্রহত হইয়া উহা ঘুরিতে লাগিল, উড়িতে লাগিল, প্রবল বেগে ধাবিত হইতে লাগিল!

 বেলুন এত দুলিতে লাগিল যে, উহার ভিতর বসিয়া থাকা অসম্ভব হইল। জলের বাক্স নড়িতে লাগিল, গ্যাস-নল বক্র হইয়া গেল। দোলনাটী কখন বা ছিঁড়িয়া পড়ে, তাঁহারা সেই চিন্তায় আকুল হইলেন!

 অকস্মাৎ বেলুন থামিল। বাতাসের গতি ফিরিল। প্রবল বেগে বিপরীতগামী বায়ু বহিতে লাগিল। বেলুন নক্ষত্র-বেগে ছুটিতে আরম্ভ করিল।