পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
৪৫

 বিদায়ের শেষ মুহূর্ত্ত আসিয়া উপস্থিত হইল। জাহাজের অধ্যক্ষ এবং নাবিকগণ সস্নেহে কর মর্দ্দন করিয়া বিদায় লইলেন। যাত্রিগণ বেলুনে আরোহণ করিলেন। ফার্গুসন্ অবিলম্বে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করিয়া গ্যাসে উত্তাপ দিতে লাগিলেন। বেলুন ক্রমেই ফুলিয়া উঠিতে লাগিল—ক্রমেই দুলিতে লাগিল—শেষে ধীরে ধীরে ঊর্দ্ধে উঠিতে লাগিল। ফার্গুসন্ তখন সহযাত্রীদিগের মধ্যস্থলে দণ্ডায়মান হইয়া টুপী খুলিয়া কহিলেন—

 “বন্ধুগণ, আমাদের এই ব্যোমযানকে একটী মাঙ্গলিক আখ্যায় অভিহিত করা যাক। আসুন আমরা এর নামকরণ করি। আজ থেকে এই বেলুনের নাম ভিক্টোরিয়া।”

 সমেবত জননণ্ডলী উল্লাসে জয়ধ্বনি করিয়া উঠিল। নাবিকগণ তখনো রজ্জু ধরিয়া বেলুনকে টানিয়া রাখিয়াছিল, কিন্তু আর পারিতেছিল না। ফার্গুসন্, কেনেডি এবং জো শূন্য হইতেই পুনরায় সকলের নিকট বিদায় লইলেন। গ্যাস ক্রমেই বেলুন মধ্যে বিস্তার করিতেছিল। ফার্গুসন চীৎকার করিয়া কহিলেন—

 “ছাড়ুন—ছাড়ুন—দড়ি ছাড়ুন—হুসিয়ার।”

 নাবিকগণ বন্ধনরজ্জু ছাড়িয়া দিল। মুহূর্ত্তমধ্যে ভিক্টোরিয়া শূন্যপথে যাত্রা করিল। রেজলিউট জাহাজ হইতে তৎক্ষণাৎ চারিবার কামান নিনাদিত হইয়া যাত্রীদিগকে শেষবার অভিনন্দিত করিল।