পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ

 বেলুন ক্রমেই উপরে উঠিতে লাগিল। উপরের বাতাস শীতল ও আকাশ পরিচ্ছন্ন ছিল। বেলুন ১৫০০ ফিট উর্দ্ধে উত্থিত হইয়া দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ধাবিত হইল । তখন পদনিম্নে জান্‌জিবার দ্বীপ একটী মসিবর্ণ বিপুল প্রান্তরের ন্যায় দেখা যাইতেছিল। কর্ষিত শস্যহীন ও কোন স্থানে শস্যসমাচ্ছন্ন বিস্তৃত ভূমি সেই মসিবর্ণ প্রান্তর মধ্যে বর্ণবৈচিত্র্য ঘটাইতেছিল। জান্‌জিবারের অধিবাসিগণ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিপীলিকাবৎ দৃষ্ট হইতে লাগিল। নাবিকদিগের জয়োল্লাসধ্বনি ক্রমেই অনন্তশূন্যে মিলাইতে লাগিল। কেবল রেজলিউট জাহাজের কামান-গর্জ্জনের প্রতিধ্বনি তখনো অস্পষ্টভাবে কর্ণে আসিয়া পৌঁছিতেছিল। জো পুলকিত হইয়া কহিল—

 “আহা, কি সুন্দর!”

 ভিক্টোরিয়া ২৫০০ ফিট উর্দ্ধে উঠিল। রেজলিউট অর্ণবপোত তখন একখানি ক্ষুদ্র ধীবরতরণীর ন্যায় দৃষ্ট হইতে লাগিল। সাগরবিধৌত আফ্রিকার পশ্চিম তীর শুধু ফেনপুঞ্জ বলিয়া মনে হইতে লাগিল। ভিক্টোরিয়া তখন ঘণ্টায় ৮ মাইল বেগে সমুদ্র অতিক্রম করিতেছিল। উহা দুই ঘণ্টার মধ্যে আফ্রিকার নিকটবর্ত্তী হইল। ফার্গুসন্ গ্যাসের উত্তাপ হ্রাস করিলেন। দেখিতে দেখিতে ভিক্টোরিয়া অনেক নিম্নে নামিয়া পড়িল। অদূরে ঘনসন্নিবিষ্ট বনশ্রেণী তখন বেশ সুস্পষ্টরূপে নয়নগোচর হইতেছিল । তাঁহারা ফাগুলি গ্রামের উপর আসিলেন । গ্রামবাসীরা দেখিল কি যেন একটা অদ্ভুত পদার্থ রাক্ষসের মত আকাশপথে