পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
৪৯

সম্মুখে যে পর্ব্বত দেখছো ওর নাম ডুথুমি। আজ রাত্রে আমরা ডুথুমির পর পারে যেয়ে বিশ্রাম করবো। ৫০০।৬০০ ফিট উপরে না উঠিলে পর্ব্বত শিখর পার হওয়া যাবে না।”


 বেলুন অগ্রসর হইতে লাগিল। জো চীৎকার করিয়া কহিল “ওই দেখুন একটা কি বিরাট বৃক্ষ। এমন বারটা গাছ এক যায়গায় থাকলেই মস্ত একটা বন হ’তে পারে।” ফার্গুসন্ বলিলেন, “ও গাছের নাম বাওবাব্—ওই দেখ, গাছের একটা কাণ্ড দেখ। কি বিশাল! প্রায় ১০০ ফিট ব্যাস হ’বে— কেমন না? কে বলতে পারে যে, এই বৃক্ষতলেই ফরাসী পর্য্যটক মেইজান ১৮৪৫ সালে মৃত্যুমুখে পতিত হননি। ওই যে দূরে একখানা গ্রাম দেখা যাচ্ছে ওর নাম জিলামোরা। মেইজান একাকী ওখানে যাবার চেষ্টা করেছিলেন। গ্রামের সর্দ্দার তাঁকে বন্দী করে’ একটা বাওবাব্ গাছের শিকড়ের সঙ্গে বেঁধে ধীরে ধীরে টুকরা টুকরা করে’ কেটেছিল! কণ্ঠার্দ্ধ কেটে স্কন্ধ থেকে মস্তক টেনে ছিঁড়ে ফেলেছিল। উঃ কি নৃশংস নরহত্যা! হতভাগ্য পর্য্যটক ২৬ বৎসর বয়সে এমনি নিষ্ঠুর ভাবে নিহত হয়েছিলেন।”

 ফার্গুসন্ গ্যাসের উত্তাপ বৃদ্ধি করিলেন। বেলুন প্রায় ৮ সহস্র ফিট উপরে উঠিল। তাঁহারা অবলালাক্রমে ডুথুমি শৈল অতিক্রম করিয়া পর্ব্বতের অপর পারে নামিলেন। বেলুন হইতে একটা নোঙ্গর নিক্ষিপ্ত হইল। অল্পক্ষণ মধ্যেই উহা একটা বৃহদাকার বৃক্ষের শাখার সহিত আবদ্ধ হইয়া গেল।