পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম পরিচ্ছেদ
৫১

এখনই উপরে উঠে যাচ্ছি। বিষাক্ত হাওয়া থেকে উপরে গেলেই তোমার অসুখ সারবে।”

 ভিক্টোরিয়া ক্রমেই উচ্চে উঠিতে লাগিল। ঊর্দ্ধে ঊর্দ্ধে আরও উর্দ্ধে উঠিয়া মেঘলোকের অন্তরালে লুক্কায়িত হইল । দূরে রুবেহো পর্ব্বতের সমুজ্জ্বল উচ্চ শিখরাবলী তখন তপনকিরণে ঝলসিতেছিল। এইরূপে তিন ঘণ্টা কাল গমন করিবার পর কেনেডি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হইয়া উঠিলেন। কহিলেন, “ফার্গুসন্ তোমার এ ঔষধ দেখছি কুইনাইনের চেয়ে ঢের ভাল।”

 বেলা দশটার সময় মেঘ অল্পে অল্পে কাটিতে লাগিল। একস্থান হইতে সম্পূর্ণই সরিয়া গেল। পর্য্যটকগণ দেখিলেন পৃথ্বিতল দেখা যাইতেছে। পদনিম্নে শত শত পর্ব্বতচূড়া রৌদ্রে জ্বলিতেছে। ফার্গুসন্‌ বিশেষ সতর্কতার সহিত ভিক্টোরিয়াকে পরিচালিত করিতে করিতে বলিলেন—

 “যদি জঙ্গেমেরোর কর্দ্দমাক্ত সিক্ত ভূমি পদব্রজে অতিক্রম করে’ আসতে হতো, তা’ হ’লে এতক্ষণ কষ্টের অবধি থাকতো না। আমাদের ভারবাহী পশুগুলির অর্দ্ধেক হয় ত এতক্ষণ মরে’ যেত। আমরাও জীবন্মত হ’য়ে পড়তেম। নিরাশা, শ্রান্তি, ক্ষুধা, পিপাসা, জ্বর এতক্ষণ আমাদের বুক ভেঙ্গে দিত। পথ-প্রদর্শকেরা সুযোগ পেয়ে লুণ্ঠন করতে আরম্ভ করতো। তাদের সে নিষ্ঠুরতা অবর্ণনীয়। দিবসে সূর্যকিরণ অসহা জ্বালাময়—রাত্রে নিদারুণ শীত। সে শীতে যেন অস্থি পর্য্যন্ত,