সুশোভিত কুঠার তপন-কিরণে জ্বলিতেছে। ফার্গুসন্ গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলেন।
তাঁহাকে প্রবেশ করিতে দেখিয়া সকলে জয়ধ্বনি করিয়া উঠিল। রাজরমণীগণ তাঁহাকে অভিবাদন করিল। পিত্তল-নির্ম্মিত বাদ্যযন্ত্র ‘উপাতু’ অর্মান ঝন্ ঝন্ করিয়া বাজিতে লাগিল। জয়ডঙ্কা ‘কিলিন্দো’র গভীর নিনাদে দিঙ্মণ্ডল পূর্ণ হইয়া উঠিল। রমণীগণ দেখিতে সুশ্রী। তাহারা দীর্ঘ নলে ধূমপান করিতে করিতে হাসিতেছিল। ছয়টী রমণী অন্যান্য রমণীদিগের নিকট হইতে একটু দূরে স্বতন্ত্রভাবে বসিয়াছিল। সুলতানের মৃত্যুর পর তাহার সহিত ইহারাও জীবন্ত সমাহিত হইবে বলিয়া নির্দ্দিষ্ট হইয়াছিল। মৃত্যুর পর পরলোকেও সুলতানের তৃপ্তির জন্য এইরূপ ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল!
ফার্গুসন্ রোগকাতর সুলতানের নিকটবর্তী হইলেন। দেখিলেন ৪০ বর্ষ বয়স্ক একটী অতিরুগ্ন লোক কাষ্ঠনির্ম্মিত একখানি অতি সাধারণ পালঙ্কে শয়ন করিয়া আছে। ফার্গুসন্ দেখিয়াই বুঝিলেন দীর্ঘকালের ব্যসনে ও অপরিমিত সুরাপানে তাহার জীবনীশক্তি ফুরাইয়া আসিয়াছে। তাহার সে শক্তিহীন দেহে নব বল দিতে পারে এমন সাধ্য কাহারো ছিল না। সুলতানকে যে শীঘ্রই মরিতে হইবে সে বিষয়ে আর তিলমাত্র সন্দেহ ছিল না। ফার্গুসন্ তাহাকে তীব্র ঔষধ পান করাইলেন। অল্পক্ষণের জন্য তাহার চৈতন্য ফিরিয়া আসিল। সুলতান দুই একবার হস্তপদ সঞ্চালন করিল দেখিয়া রাজপরিবারের আনন্দের সীমা রহিল না।