এসিয়াই কি সমগ্র মানবজাতিকে পুত্রের মত স্নেহে লালন পালন করে নাই? এসিয়ার অরণ্য এসিয়ার উষর ক্ষেত্র কি একদিন এই মানবজাতিই উর্বর করে’ তোলে নি? কিন্তু এসিয়ার সুবর্ণখনি যখন নিঃশেষে ফুরিয়ে গেল——যখন সেখানে সোণা তুলতে পাথর উঠতে লাগল, তখন এসিয়ারই বড় আদরের সন্তান-সন্ততি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ল। এখন দেখ ইউরোপও দিন দিন উষর ক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে—আর সেখানে আগেকার মত শস্য ফলে না। তার বৃক্ষে আর এখন আগেকার মত মধু-ফল হয় না—তার বুকে আর এখন আগেকার মত মাণিক জ্বলে না। ইউরোপের জীবনী-শক্তি ফুরিয়ে আসছে দেখে গতিশীল মানবজাতি আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকারও আবার এই দশাই ঘটবে। আর অরণ্য উর্ব্বর শস্যক্ষেত্র হ’বে—তার বক্ষ চিড়ে মানুষ এখন যে ক্ষীর পান করছে, তা এক সময়ে ফুরিয়ে যাবেই যাবে! আজ তার যে ক্ষেত্রে বৎসরে দু’বার শস্য ফলে, কালে সেখানে তৃণও জন্মাবে না। তখন দেখো আফ্রিকাই মানবের আশ্রয়স্থল হ’বে। আজ আফ্রিকার জলে বিষ, স্থলে বিষাক্তবাণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে— আজ তার বিপুল অরণ্যে সিংহ ব্যাঘ্র ভল্লুক অবাধে বিচরণ করছে, কিন্তু কালে সেই বিষ অমৃত হ’বে, অরণ্য সুসংস্কৃত নগরে পরিণত হ’বে, মরুভূমে উর্বর শস্যক্ষেত্র হাসবে। এখন আমরা যে জনপদের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি, কে জানে কালে সেখানে এমন মানুষ আসবে না যে, তাদের নব নব আবিষ্কারের কাছে
পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম পরিচ্ছেদ
৬৭
