বর্ত্তমান যুগের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার শিশুর খেলার মত বোধ হ’বে না?”
উত্তেজিত কণ্ঠে জো কহিল, “হায়, সেদিন যদি দেখে যেতে পারি!”
“এখনো তার অনেক দেরি আছে জো—অনেক দেরি।” পর্য্যটকদিগের মধ্যে যখন এইরূপ কথাবার্ত্তা হইতেছিল, তখন উজ্জ্বল তপন-কিরণে মেঘমণ্ডল স্তরে স্তরে আলোকিত হইতেছিল। মেঘরাশির প্রান্তদেশ আলোক-সম্পাতে সমুজ্জ্বল হইতেছিল। সুবৃহৎ বৃক্ষ, বৃক্ষের ন্যায় বৃহৎ লতা মসৃণ গালিচার ন্যায় সুবিস্তৃত শৈবালাচ্ছন্ন ভূমিতল সবই যেন কি এক অভিনব শোভা ধারণ করিয়াছিল। স্থানে স্থানে উচ্চ ভূপৃষ্ঠ, ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্ব্বতবৎ প্রতীয়মান হইতে লাগিল। দুর্ভেদ্য কানন, দুরতিক্রম্য কণ্টকময় বনভূমি, মধ্যে মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রামসমূহ যন্ত্রচালিত চিত্রের পর চিত্রের ন্যায় চক্ষের সম্মুখ দিয়া ভাসিয়া যাইতেছিল।
জগানিকা হ্রদ হইতে জন্মলাভ করিয়া যে মালাগাজারি নদী কত ক্ষেত্র ধৌত করিয়া, কত প্রান্তরের পার্শ্ব দিয়া, কত অরণ্যের চরণ চুম্বন করিয়া খরবেগে অগ্রসর হইয়াছে, তাহা যেন প্রবহমান জল-প্রপাতের ন্যায় বোধ হইতে লাগিল। তাহারই তীরে শত সহস্র স্থূলকায় গো-মেষ-মহিষাদি নিঃশঙ্কচিত্তে বিচরণ করিতেছিল, কখনো বা সুদীর্ঘ তৃণের মধ্যে লুক্কায়িত হইতেছিল। কোথাও আবার সুগন্ধময় বৃক্ষ-লতাপরিপূর্ণ বিস্তৃত ক্ষেত্র, ক্ষুদ্র