পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম পরিচ্ছেদ
৬৯

কুসুমস্তবকের ন্যায় দৃষ্ট হইতেছিল। তাহার মধ্যে নানাস্থানে কোথাও সিংহ, কোথাও ব্যাঘ্র, কোথাও হায়েনা প্রভৃতি অনায়াসে গমনাগমন করিতেছিল। কোন স্থানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৃক্ষাদি চূর্ণ করিয়া, লতাগুল্মাদি পদ-দলিত করিয়া, সুবৃহৎ বৃক্ষের সুদৃঢ় শাখা-প্রশাখাগুলি অবনত করিয়া, কম্পিত করিয়া করিযূথ আহারান্বেষণে ভ্রমণ করিতেছিল।

 কেনেডি উল্লাসভরে কহিলেন “মৃগয়ার উপযুক্ত দেশ। এখানে শিকার করলে হয় না ফার্গুসন্?”

 “না ডিক্ আজ কাজ নাই। রাত্রি হ’য়ে আসছে। মেঘের অবস্থা দেখে বোধ হচ্ছে ঝড়ও হ’বে। এদেশের ঝড় বড় ভয়ানক। এখানকার ভূমি যেন বৈদ্যুতিক প্রবাহের আকর। বায়ুস্তরও বৈদ্যুতিক প্রবাহে পূর্ণ হয়েছে!”

 “নিচে নামলে হয় না?”

 “নিচে নামলেই বিপদ্ বেশী। বরং উপরে যাওয়াই ভাল। আমার কেবলই শঙ্কা হচ্ছে, প্রবল বাতাস এলে পথ-ভ্রষ্ট হ’য়ে না যাই।”

 “তবে কি করবে?”

 “যদি পারি, আরো উপরে উঠব।”

 প্রকৃতি ক্রমেই স্তব্ধ হইতেছিল দেখিয়া ফার্গুসন্ বুঝিলেন অবিলম্বে ঝড় হইবে। নিষ্কম্প বৃক্ষপত্র, নিশ্চল মেঘমালা, নিস্তব্ধ প্রকৃতি তাঁহাকে একান্ত শঙ্কান্বিত করিয়া তুলিল। বিমান-বিহারী পক্ষিগণ দেখিতে দেখিতে বৃক্ষকোটরে আশ্রয়