পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম পরিচ্ছেদ
৭৩

বামে তখনো লকলক করিয়া বিদ্যুৎ জ্বলিতেছিল। দশদিক্ কম্পিত করিয়া তখনো বজ্র ডাকিতেছিল!

 ফার্গুসন্ ক্ষান্ত হইলেন না। কহিলেন, “এখন ভগবান্ ভরসা। তিনি রাখেন বাঁচিব—নহিলে আর কোনো উপায় নাই।”

 ফার্গুসনের সঙ্গীদ্বয় তখন একেবারেই হতবুদ্ধি হইয়াছিলেন। তাঁহার কথা কাহারো কর্ণে প্রবেশ করিল না। বেলুন উর্দ্ধে উঠিতেছিল। সেই অন্ধকারের ভিতর দিয়া দারুণ শিলাবৃষ্টি কর্ত্তৃক প্রহত হইয়া ভিক্টোরিয়া অগ্নি-রাজ্যের ভিতর দিয়া ক্রমেই উচ্চে—আরো উচ্চে উঠিতেছিল।

 পনের মিনিটের মধ্যেই উহা ঝড়ের সীমা অতিক্রম করিল। আহা কি সুন্দর দৃশ্য! মস্তকের উপর উজ্জ্বল নক্ষত্রখচিল নির্ম্মল আকাশ, আর পদতলে প্রলয়ের বায়ুপ্রবাহ সহস্র মুখে অগ্নি ঢালিতে ঢালিতে দিক্ হইতে দিগন্তে ছুটিয়া চলিয়াছে! চন্দ্রের শীতল উজ্জ্বল কনক কিরণরাশি কালো মেঘের উপর পতিত হইয়া আলো করিয়া তুলিয়াছে। এ দৃশ্য মানব-নয়নের অতীত।

 তাঁহারা নির্ব্বাক হইয়া চাহিয়া রহিলেন।