চলিয়া গেল। এ স্থানের কাফ্রিরা কতকাংশে সভ্য। তাহাদের মধ্যে রাজতন্ত্রশাসনপ্রণালী প্রচলিত। রাজার ক্ষমতা অসীম। ফার্গুসন্ ধীরে ধীরে বেলুনের উত্তাপ কমাইলেন এবং নোঙ্গর নিক্ষেপ করিলেন। ভাবিলেন কোনো অপেক্ষাকৃত উচ্চ ভূমিতে অথবা বৃক্ষশাখায় নোঙ্গর অবশ্যই আবদ্ধ হইবে। উহা সুদীর্ঘ তৃণের ভিতর লুক্কায়িত হইল। তৃণের শির স্পর্শ করিয়া বেলুন দুলিয়া ভাসিয়া চলিল।
কেনেডি ক্রমেই অধীর হইতে লাগিলেন। শেষে হতাশভাবে বলিলেন, “নোঙ্গর ত ধরে না দেখছি, শিকার করা আর হ’লো না।”
যোজনের পর যোজনবিস্তৃত সুদীর্ঘ শ্যামতৃণাকীর্ণ ভূমি যেন বাতান্দোলিত শ্যামসাগরের ন্যায় শোভা পাইতেছিল। কোথাও বা নানা বর্ণের বিহঙ্গমগণ কলরব করিয়া উড়িয়া পলায়ন করিতে লাগিল। কোথাও গুচ্ছ গুচ্ছ প্রস্ফুটিত পুষ্পরাশি ছিন্ন করিয়া বেলুনের সঙ্গে সঙ্গে নোঙ্গর চলিতেছিল, অকস্মাৎ একটী ধাক্কা লাগিল। জো কহিল, “পাহাড়ের গায়ে নোঙ্গর ধরেছে।” কেনেডি বলিলেন, “মই ফেল।”
কেনেডির কথা মুখে থাকিতে থাকিতেই তাঁহারা একটী গভীর চিৎকারধ্বনি শুনিলেন। সকলেই সমস্বরে বলিয়া উঠিলেন, “ব্যাপার কি?”
“কি ভয়ানক চিৎকার—এমন ত কখনো শুনি নাই!”
কেনেডির কথায় বাধা দিয়া জো বলিল, “এ কি আমরা যে আবার চলতে আরম্ভ করলেম।”