পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ
৮৫

 তিনি হর্ষোৎফুল্ল হইয়া বলিলেন, “ওই তো সেই জলপ্রপাত! পর্য্যটক ডিবোনা ওর কথাই বলে গেছেন।”

 বেলুন যতই অগ্রসর হইতে লাগিল, নদীর বিস্তার ততই অধিক হইতে লাগিল। ক্রমেই নদীমধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ-পুঞ্জ দেখা যাইতে লাগিল। ফার্গুসন্ বিশেষ মনোযোগের সহিত দ্বীপগুলি দেখিতে লাগিলেন। কতকগুলি কাফ্রি একখানি ডোঙ্গায় আরোহণ করিয়া বেলুনের তলদেশে আসিবামাত্র কেনেডি বন্দুকের গুলি চালাইয়া তাহাদিগের অভ্যর্থনা করিলেন। তাহারা প্রাণভয়ে পলায়ন করিল।

 ফার্গুসনের দৃষ্টি এদিকে ছিল না। তিনি দূরবীক্ষণ লইয়া নদীর ঠিক মধ্যস্থলে স্থিত একটা ক্ষুদ্র দ্বীপ বিশেষ অভিনিবেশ পূর্ব্বক দেখিতেছিলেন। দেখিতে দেখিতে কহিলেন,

 “ওই না চারটা গাছ দেখা যাচ্ছে? ওই দ্বীপের নাম বেঙ্গল দ্বীপ। আমাদের ওইখানে নামতে হবে।”

 “কতকগুলো কাফ্রিদের ওখানে বাস আছে ব’লে বোধ হচ্ছে না?”

 “তা’ হো’ক ডিক্। ওরা দেখছি জন কুড়ি হ’বে। বন্দুক থাকতে কুড়ি জন কাফ্রি তাড়িয়ে দিতে কত সময় লাগবে!”

 তখন মধ্যাহ্ন-সূর্য্য ঠিক মস্তকোপরি অগ্নি বর্ষণ করিতেছিল। বেলুন দ্বীপের সমীপবর্ত্তী হইতেছে দেখিবামাত্রই কাফ্রিগণ চীৎকার করিতে আরম্ভ করিল। তাহাদের মধ্যে এক জন বৃক্ষ ত্বকে নির্ম্মিত টুপী আপন মস্তক হইতে লইয়া নাড়িতে লাগিল।