পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ
৯৩

 আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইয়াছিল। বাতাসের চিহ্নমাত্রও ছিল না। কেনেডি সেই নীরব অন্ধকার মধ্যে বিশেষ মনোযোগের সহিত ইতস্ততঃ দেখিতে লাগিলেন। চিত্ত যখন উৎকণ্ঠিত থাকে, তখন মানুষ কত কি দেখে—তাহাদের কোনোটার অস্তিত্ব থাকে—কাহারো কিছুই থাকে না। হঠাৎ একবার বোধ হইল কেনেডি যেন একটা ক্ষীণ আলোক-রেখা দেখিতে পাইলেন। তিনি বিশেষ মনোযোগপূর্ব্বক চাহিয়া রহিলেন। আলোক-রশ্মি আর দেখা গেল না। কেনেডি ভাবিলেন, এ কি তবে মায়া?

 তিনি উৎসুক হইয়া চাহিয়া রহিলেন। কিছুক্ষণ গেল। আলোক-রেখা আর দেখা গেল না। কেনেডি তখন নিচিন্ত হইলেন।

 ও কি—ও? কেনেডি চমকিয়া উঠিলেন। এ বংশীধ্বনি কোথা হইতে হইল? নিশ্চয়ই বংশীধ্বনি। তাই কি? এ কি কোন নিশাচর পক্ষীর কণ্ঠ? বন্যপশুর চিৎকার নয় ত? আবার মনে হইল, এ বুঝি মনুষ্যের কণ্ঠ! কেনেডি বন্দুকটা পরীক্ষা করিয়া হাতের কাছে রাখিলেন। ভাবিলেন পশু হোক, পক্ষী হোক, মনুষ্য হোক, বেলুন অনেক উপরে আছে। চিন্তা কি?

 মুহূর্ত্তের জন্য মেঘমুক্ত চন্দ্রালোকে তিনি দেখিলেন, কতক গুলি অস্পষ্ট ছায়ামূর্তি নড়া-চড়া করিতেছে! ভাল করিয়া দেখিতে না দেখিতেই মেঘে চন্দ্র ঢাকিয়া গেল। কেনেডি আর বিলম্ব না করিয়া ফার্গুসনের গাত্র স্পর্শ করিয়া তাঁহাকে জাগ্রত করিলেন। কহিলেন, “চুপ, ধীরে কথা কও।”