পাতা:বৈষ্ণবাচার্য্য শ্রীমধ্ব.djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈষ্ণবাচার্য্য মধব সুখাদি অনন্তগুণশালী বেদপ্রতিপাদিত ‘ব্রহ্ম-সংজ্ঞক নারায়ণকেই বিশ্বের কর্তা বলিয়া প্রতিপাদন করিলেন । শ্ৰীমধব সাংখ্যমত অর্থাৎ প্রকৃতির জগৎকত্রীত্ব নিরাস করিলেন। তিনি বলিলেন, চেতনের ইচ্ছানুসারেই যাবতীয় স্বষ্টি হইয়া থাকে, যেমন বস্ত্রের স্বষ্টি চেতন তন্তুবায়ের ইচ্ছানুসারেই সিদ্ধ হয় । ব্রহ্ম জগতের বিকারী কারণ হইতে পারেন না, যেহেতু তিনি চেতনবস্তু। যে বস্তু বিকারী কারণ, উহা চেতন নহে,—যেমন দুগ্ধাদি বস্তু। স্বয়ং মহাদেবও এই জগতের কর্তা হইতে পারেন না, যেহেতু তিনিও “সোইরোদীৎ” অর্থাৎ তিনি রোদন করিয়াছিলেন—এই শ্রুতিবাক্যানুসারে দুঃখাদি দোষের অধীন । যিনি দুঃখাদির অধীন, তিনি কখনও জগতের কারণ হইতে পারেন না—যেমন চৈত্র প্রভৃতি ব্যক্তিবিশেষ । অতএব যদি সাক্ষাৎ মহাদেবেরই জগৎকর্তৃত্ব অসিদ্ধ হয়, তাহ হইলে অবিবেকিজনগণের পরিকল্পিত বিনায়ক, স্থৰ্য্য প্রভৃতির জগৎকর্তৃত্ব কোন মতেই সঙ্গত হইতে পারে না । ভগবান ও র্তাহার গুণে ভেদ নাই । তবে ‘বিশেষ’ নামক ধৰ্ম্মের দ্বারা তাহার গুণের আনন্দ সাধিত হয় । বেদবিরোধী মাধ্যমিক ( বৌদ্ধ ) নামে এক সম্প্রদায় শূন্তকেই জগতের তত্ত্ব বলিয়া স্বীকার করেন, তাহারাও ব্যক্ত ও প্রচ্ছন্নভেদে দ্বিবিধ। মায়াবাদিগণই প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ । তাহারা বেদমন্ত্র ব্রাহ্মণভাগের প্রামাণ্য অস্বীকার করায় বেদবিরোধী। তাহারা নির্বিবশেষ-শূন্য-পদার্থকেই “ব্ৰহ্ম’ নামে অভিহিত করিয়া নিজদিগকে বেদান্তী’ বলিয়া পরিচয় প্রদান করিয়া থাকেন। ইহারা নিখিল প্রপঞ্চকে ব্রহ্মের বিবৰ্ত্তস্বরূপ বলেন। ইহাদের কল্পিত ব্ৰহ্মপদার্থ ও শূন্যপদার্থের কোন বিশেষ না থাকায় এই উভয়মতের কোন পার্থক্য লক্ষিত হয় না । মায়াবাদীর কল্পিত শূন্তপদার্থ কখনও জগতের কারণ হইতে পারে না ; কারণ উহা অসৎ । [ ১৪৬ ]