সপ্তবিংশ অধ্যায়—শ্ৰীমধবাচার্য্যের সিদ্ধান্ত নদী, শিলা, বনস্পতি, ওষধি, ধান্ত, ফল, পুষ্প, নবরত্ন, স্বৰণ, লৌহ প্রভৃতি সৰ্ব্ববস্তু স্বষ্টি করেন। এই সকলই কাৰ্য্যরূপে অনিত্য, কিন্তু কারণরূপে নিত্য ; কাৰ্য্যরূপে অনিত্য হইলেও শশশৃঙ্গ, আকাশ-কুসুম, কুৰ্ম্মলোম ও গন্ধৰ্ব্ব-নগরাদির ন্তায় ‘অসৎ নহে, অথবা রজ্জারোপিত সর্প বা শুক্ত্যারোপিত রজতবৎ মিথ্যা নহে ; অল্প-কালীনত্বহেতু ‘অনিত্য’, ‘অসত্য নহে, ‘ক্ষণিকও নহে ; ‘ক্ষণসম্বন্ধি বলা গেলেও ক্ষণমাত্রবত্তী” বলা যাইতে পারে না। ঘট-পটাদি ‘ক্ষণসম্বন্ধি হইলেও কারণরূপে নিত্য। বৌদ্ধগণ ‘ক্ষণিক বলিতে যাহার পূৰ্ব্বে বা পরে অবস্থান নাই, ক্ষণে-ক্ষণে উৎপত্তি ও ক্ষণে-ক্ষণে নাশ হয়, তাহাই উদ্দেশ করিয়া থাকেন । পরন্তু ‘ক্ষণসম্বন্ধি বলিতে তাহা বুঝায় না ; ক্ষণসম্বন্ধি’ হইলেও তাহা উপাদান-কারণরূপে নিত্য। যেমন, ঘট—কাৰ্য্য, ঘট-ভঙ্গে কপাল (ঘটের খণ্ডিত দ্বিতীয় ভাগ ), কপাল-ভঙ্গে কাপালিক’ ( ঘটের চতুর্থ ভাগ ), কাপালিক-ভঙ্গে ‘মৃত্তিকাদি, মৃত্তিক-ভঙ্গে ক্রমশঃ ‘প্রকৃতি । ঘট হইতে ক্রমে প্রকৃতির পূর্ব পর্য্যন্ত সমস্ত বস্তুই কাৰ্য্য। ইহারা অনিত্য, কিন্তু প্রকৃতি মূল-উপাদান-কারণরূপে নিত্যা । কল্পের আদি হইতে আরম্ভ করিয়া কল্পাবসান পর্যন্ত উপাদান-কারণ প্রকৃতি হইতে ঘটাদি পৰ্য্যন্ত নানা কাৰ্য্যরূপ পরিণাম এবং কল্পাস্তে প্রকৃত্যাখ্য সুক্ষরূপে অবস্থিতি ; তাহ। মিথ্যা নহে। মায়াবাদিগণ যে বলিয়া থাকেন-ব্ৰহ্মজ্ঞানের পরিপাকে ব্যবহারিক জগৎ তপ্ত লৌহগত জলবিন্দুর দ্যায় স্বতঃই অদৃগু হইয়া পড়ে, তাহা বাল-কোলাহল মাত্র ; যেহেতু বিষ্ণু জ্ঞানপূর্বক লীলামাত্রে এই জগৎ স্বষ্টি করিয়াছেন। তিনি স্বয়ং বুদ্ধিপূর্বক কাৰ্য্যপৰ্য্যন্ত ইহার নাশ করেন ; তখন জগৎ কারণরূপে অবস্থান করিয়া থাকে। বিষ্ণুর [ R・s ] জগন্মিথ্যাজুবাদ খণ্ডন S 8
পাতা:বৈষ্ণবাচার্য্য শ্রীমধ্ব.djvu/২২৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।