পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নিবেদন

 বৌদ্ধ-ভারত গ্রন্থ বিশেষের অনুবাদ নহে। দেশের ও বিদেশের বৌদ্ধশাস্ত্রানুরাগী সুধীগণের গ্রন্থাবলী ও রচনা অবলম্বনে এই গ্রন্থ সঙ্কলিত হইল। সাধারণ ইতিহাস গ্রন্থের সহিত এক স্থলে এই গ্রন্থের পার্থক্য দৃষ্ট হইবে। এই গ্রন্থখানি রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাস নহে। মহাপুরুষ বুদ্ধের সাধনা এই দেশে কি প্রকারে এক বিরাট সভ্যতার সৃষ্টি করিয়াছিল এই গ্রন্থে তাহাই প্রদৰ্শন করিবার চেষ্টা করা হইয়াছে। যে সাধনার মূলে সত্যরত্ন নিহিত থাকে সেই সাধনা কিছু-না-কিছুর সৃষ্টি করিয়া থাকে। ইতিহাসজ্ঞ ব্যক্তিমাত্রেই ইহা জ্ঞাত আছেন, মোহম্মদ, নানক, কবীর, চৈতন্য প্রভৃতি মহাপুরুষদিগের সাধনা ক্ষুদ্র-বৃহৎ রাষ্ট্র কিংবা সম্প্রদায়ের সষ্টি করিয়াছে।

 ইয়ুরোপের রাষ্ট্ৰীয় ইতিবৃত্তের আলোকে যাহারা প্রাচীন ভারতের ইতিহাস আলোচনা করেন তাহারা ঐ যুগের বিচ্ছিন্ন ঘটনাবলীর মধ্যে কোনো ঐক্যসূত্র খুঁজিয়া পান না। বস্তুতঃ প্রাচীন ভারতের ইতিবৃত্ত যে অস্পষ্টতার কুহেলিকায় সমাচ্ছন্ন তাহা অস্বীকার করা যায় না। কিন্ত ঐ যুগের বিচ্ছিন্ন ঘটনারাজির অভ্যন্তরে ঐক্যের একটি চিরন্তন ধারা ফল্গুর অন্তঃসলিলা ধারার মত নিঃসন্দেহে প্রবাহিত হইতেছে। ভারত-ইতিহাসের এই ঐক্যধারা সম্ভবতঃ যুগ-প্রবর্ত্তক মহাপুরুষদের সাধনার অমৃতধারা। বশিষ্ঠ-বিশ্বামিত্র, ব্যাস-বাল্মীকি, বুদ্ধ-শঙ্কর প্রভৃতি মহাজনদের সাধনার মধ্যে ভারত-ইতিহাসের ঐক্যসূত্রের সন্ধান করিতে হইবে।

 ছয় বৎসর কঠোর সাধনার ফলে মহাপুরষ বুদ্ধ যে সত্য লাভ করেন উহার আকর্ষণে যাঁহারা তাঁহার চারিদিকে দলবদ্ধ হইলেন তাঁহাদিগকে লইয়া সঙ্ঘের সৃষ্টি হইল। এই সঙ্ঘের সাধুরাই মহাপুরেষের বাণী প্রচার করিতেন। সঙ্ঘের প্রভাব সমস্ত দেশের