পাতা:বৌ-ঠাকুরাণীর হাট - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৪
বৌ-ঠাকুরাণীর হাট

পাঠাইতে অনুরােধ করিয়া রামচন্দ্র এক চিঠি লিখিয়াছে। তাহা হইলে বিভা নিশ্চয়ই সেখানে যাইতে আর অমত করিবে না।”

ঊনত্রিংশ পরিচ্ছেদ।

 সন্ধ্যার পর বসন্তরায় একাকী বহির্ব্বাটিতে বসিয়া আছেন। এমন সময়ে সীতারাম তাঁহাকে আসিয়া প্রণাম করিল।

 বসন্তরায় তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন—“কি সীতারাম, কি খবর?”

 সীতারাম কহিলেন, “সে পরে বলিব, আপনাকে আমার সঙ্গে আসিতে হইবে।”

 বসন্তরায় কহিলেন, “কেন, কোথায় সীতারাম?”

 সীতারাম তখন কাছে আসিয়া বসিল। চুপি চুপি ফিস্ ফিস্ করিয়া কি বলিল। বসন্তরায় চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কহিলেন, “সত্য নাকি?”

 সীতারাম কহিল, “আজ্ঞা হাঁ মহারাজ।”

 বসন্তরায় মনে মনে অনেক ইতস্তত করিতে লাগিলেন। কহিলেন— “এখনি যাইতে হইবে না কি!”

 সীতারাম—“আজ্ঞা হাঁ!”

 বসন্তরায়—“একবার বিভার সঙ্গে দেখা করিয়া আসিব না?”

 সীতারাম—“আজ্ঞা—না—আর সময় নাই!”

 বসন্তরায়—“কোথায় যাইতে হইবে?”

 সীতারাম—“আমার সঙ্গে আসুন, আমি লইয়া যাইতেছি।”

 বসন্তরায় উঠিয়া দাঁড়াইয়া কহিলেন—“একবার বিভার সঙ্গে দেখা করিয়া আসি না কেন?”

 সীতারাম—“আজ্ঞা না, মহারাজ! দেরি হইলে সমস্ত নষ্ট হইয়া যাইবে!”