তাহার উপরে আবার সম্প্রতি শ্রীপুরের ঘরে বিবাহ দিয়াছি; সেই অবধি বালকটা একেবারে অধঃপাতে গিয়াছে। ঈশ্বর করুন, আমার কনিষ্ঠ পুত্রটি যেন উপযুক্ত হয়, আমি যাহা আরম্ভ করিয়াছি তাহা শেষ যদি না করিতে পারি তাহা হইলে মরিবার সময়ে ভাবনা না থাকিয়া যায় যেন! সে কি তবে এখনও ফিরিয়া আসে নাই?”
মন্ত্রী—“না মহারাজ!”
ভূমিতে পদাঘাত করিয়া প্রতাপাদিত্য কহিলেন একজন প্রহরী তাহার সঙ্গে কেন যায় নাই?”
মন্ত্রী—“একজন যাইতে প্রস্তুত হইয়াছিল, কিন্তু তিনি বারণ করিয়াছিলেন।”
প্রতাপ—“অদৃশ্যভাবে, দূরে দূরে থাকিয়া কেন যায় নাই?”
মন্ত্রী—“তাহারা কোন প্রকার অন্যায় সন্দেহ করে নাই।”
প্রতাপ—“সন্দেহ করে নাই। মন্ত্রী, তুমি কি আমাকে বুঝাইতে চাও, তাহারা বড় ভাল কাজ করিয়াছিল? মন্ত্রী, তুমি আমাকে অনর্থক যাহা-তাহা একটা বুঝাইতে চেষ্টা পাইও না। প্রহরীরা কর্ত্তব্য কাজে বিশেষ অবহেলা করিয়াছে। সে সময়ে দ্বারে কাহারা ছিল ডাকিয়া পাঠাও। এই ঘটনাটির জন্য যদি আমার কোন একটা ইচ্ছা বিফল হয়, তবে আমি সর্ব্বনাশ করিব। মন্ত্রী, তােমারও তাহা হইলে ভয়ের সম্ভাবনা আছে। আমার কাছে তুমি প্রমাণ করিতে আসিয়াছ, এ কাজের জন্য কেহই দায়ী নহে! তবে এ দায় তােমার!”
প্রতাপাদিত্য প্রহরীদিগকে ডাকাইয়া পাঠাইলেন। কিয়ৎক্ষণ গম্ভীরভাবে থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “হাঁ। দিল্লীশ্বরের কথা কি বলিতেছিলে?”
মন্ত্রী—“শুনিলাম আপনার নামে দিল্লীশ্বরের নিকট অভিযােগ, করিয়াছে।”